বায়েক গ্রাম গণহত্যা (কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
বায়েক গ্রাম গণহত্যা (কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ২১শে মে। এতে ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ এবং ২৭ জন আহত হন।
ঘটনার দিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার বায়েক গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ-সময় তারা যাকে সামনে পায় তাকেই হত্যা করে। পাকিস্তানি বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে সেদিন ঘটনাস্থলেই ৭০ জন শহীদ এবং ২৭ জন আহত হন। শহীদদের মধ্যে ৬৮ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন- আবদুল গণি (পিতা নসবউদ্দিন), নূর মিয়া (পিতা আবদুল গনি), আবদুল খালেক (পিতা সিরাজ আলী), আবদুস সামাদ (পিতা আবদুল খালেক), আবদুল মতিন (পিতা নওয়াব আলী), মালু মিয়া (পিতা আছমত আলী), আসমত আলী, সেকান্দর আলী (পিতা আবদুল গনি), জহিরউদ্দিন (পিতা ছমিরউদ্দিন), আবদুল গনি (পিতা সবদর আলী), আবদুর রাজ্জাক, তোতা মিয়া, সুফিয়া খাতুন (স্বামী ইউসুফ আলী), মনসুর আলী (পিতা ইউসুফ আলী), তার দুই ছেলে, তমিজউদ্দিন সর্দার, আবদুল মতিন, নূরুল ইসলাম (পিতা মমতাজ আলী), জব্বর আলী (৬০) (পিতা আলী নেওয়াজ), আনোয়ারা খাতুন (৪৫) (স্বামী জব্বর আলী), কটু মিয়া (৭) (পিতা জব্বর আলী), বণিক মিয়া (৫) (পিতা জব্বর আলী), তৈয়ব আলী (৫০) (পিতা নায়েব আলী), শাহজাহান মিয়া (১) (পিতা তৈয়ব আলী), জামাল হোসেন (৮) (পিতা তৈয়ব আলী), বিল্লাল হোসেন (১২) (পিতা তৈয়ব আলী), দুলাল মিয়া (৩) (পিতা তৈয়ব আলী), মিজানুর রহমান (১) (পিতা তৈয়ব আলী), মনসুর আলী (৫৫) (পিতা আলী নেওয়াজ), আম্বিয়া খাতুন (৪৫) (স্বামী মনসুর আলী), আয়েশা খাতুন (১৪) (পিতা মনসুর আলী), ইউসুফ আলী (৬০), শাফিয়া খাতুন (৪৫) (স্বামী ইউসুফ আলী), সুন্দর আলী (৪০) (পিতা নোয়াজ আলী), মালু মিয়া (৩৫) (পিতা আলী আহম্মদ), সূর্যবানু বেগম (৩৩) (স্বামী সুন্দর আলী), নবজাতক এক শিশু (পিতা আবদুস সামাদ), আসমত আলী (৬০) (পিতা আড়াই মিয়া), আবদুল মালেক মালু (৪০) (পিতা আসমত আলী), জরুউদ্দিন (৪৫) (পিতা জমিরউদ্দিন), আছিয়া খাতুন (৩০), ছয়ফুন নেছা (৬৩) (স্বামী আলী আহাম্মদ), আবদুর রাজুক (৪০) (পিতা আলী নেওয়াজ), চান মিয়া পাঠান (৭০) (পিতা আবদুল গণি পাঠান), উজির আলী (৭৫) (পিতা কমরউদ্দিন), তমিজউদ্দিন (৮০) (পিতা আসাবউদ্দিন সর্দার), লাল মিয়া (৫০), কালা মিয়া (৭০) (পিতা সাদেক বক্স), মুসলিম উদ্দিন (৩৫) (পিতা নওয়াব আলী), নূর ইসলাম (১৮) (পিতা নবিউদ্দিন), নূরুল ইসলাম (২৫) (পিতা মন্তাজ আলী), আরু মিয়া (পিতা আড়াই মিয়া), আলতাফ আলী (পিতা আজগর আলী), জনু বেগম (২৭), জবুর মা (৪৫), জহুর আলী, রুফিয়া খাতুন, মনসুর আলী, কমলা খাতুন, নায়েব আলী, মিলন মিয়া, সুরুজ মিয়া, জয়ফনের নেছা, আলী আহাম্মদ, আবদুল বারেক, পাপিয়া খাতুন, শ্যামা মিয়া, সুধন মিয়া ও রাফিয়া খাতুন।
বায়েক গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নারী-পুরুষ ও শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করে। একদিনের শিশুও তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পায়নি। পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাবার পর এলাকাবাসী নিহতদের লাশ বাড়ির আঙ্গিনা ও গ্রামের কবরস্থানে সমাহিত করে। এ আক্রমণে আহত ২৭ জন ভারতের আগরতলায় গিয়ে চিকিৎসা নেয়। [জয়দুল হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড