বাবুরাইল সেতু অপারেশন (নারায়ণগঞ্জ সদর)
বাবুরাইল সেতু অপারেশন (নারায়ণগঞ্জ সদর) পরিচালিত হয় অক্টোবর মাসে। এতে দুজন রাজাকার নিহত ও একজন আহত হয়।
২৭শে মার্চের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ সদরের বাবুরাইল সেতুতে স্থানীয় রাজাকার বারেক, হাসিন, মাহি, জসিমউদ্দিন প্রমুখ অবস্থান নেয়। তারা ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াতের সময় নিরীহ লোকজনদের টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিত। কেউ- কেউ তাদের বাড়িতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে অত্যাচার করত। তাদের এসব অপরাধ বন্ধ করার জন্য নারায়ণগঞ্জের গ্রুপ কমান্ডার মাহফুজুর রহমান এক অপারেশনের পরিকল্পনা করেন। তাঁর সঙ্গে এ অপারেশনে অংশ নেন কাশীপুরের জানে আলম, ইপিআর- এর ইসমাইল ইসলাম, পাইকপাড়ার সফিউদ্দিন আহম্মেদ এবং গোপনগরের নাজিরউদ্দিন আহম্মেদ। ঘটনার দিন। মুক্তিযোদ্ধারা ফতুল্লার আলীরটেক ইউনিয়নের মুক্তারকান্দি গ্রাম থেকে নৌকায় চড়ে বাবুরাইল গ্রামে আসেন। এরপর কমান্ডার মাহফুজুর রহমান সন্ধ্যার দিকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রিকশায় চড়ে সেতুর পাশের রাস্তা দিয়ে যাবার সময় রাজাকারদের সেতুর ওপর বসা দেখেন। তাদের দেখামাত্র মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা থেকে ফায়ার করেন। এতে রাজাকার বারেক ও হাসিন নিহত এবং মাহি আহত হয়।
ভারত থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম দেওভোগের আমবাগানের খোকন বিশ্বাস জুলাই মাসে স্থানীয় দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাবুরাইলের শেষ মাথায় হাকিম কন্ট্রাক্টরের মাঠে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। বাবুরাইলের গোলাপ খান নামে একজন রাজাকার তা দেখে ফেলে এবং রাজাকাররা তৎক্ষণাৎ তাঁদের ওপর আক্রমণ চালায়। প্রশিক্ষণরত দুজন মুক্তিযোদ্ধা দৌড়ে পালাতে সক্ষম হলেও খোকন বিশ্বাস বাঁচার তাগিদে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ঝাঁপ দেন। রাজাকার গোলাপ খান তাঁকে লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এর ফলে পুকুরেই তিনি শহীদ হন। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড