You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.14 | বান্দুরা যুদ্ধ (নবাবগঞ্জ, ঢাকা) - সংগ্রামের নোটবুক

বান্দুরা যুদ্ধ (নবাবগঞ্জ, ঢাকা)

বান্দুরা যুদ্ধ (নবাবগঞ্জ, ঢাকা) ১৪ই আগস্ট সংঘটিত হয়। যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর কমান্ডারসহ ৬ জন সৈন্য নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।
পাকস্তানি সৈন্যরা নবাবগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের পর রাজাকার, আলবদর আলসামস ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সহযোগিতায় নবাবগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম-মহল্লা ও হাটবাজারে ব্যপক গুলিবর্ষণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, নারীনির্যাতন এবং নির্মম হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করতে থাকে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ করতে থাকেন। ১৪ই আগস্ট বান্দুরায় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে নবাবগঞ্জ পশ্চিম জোনের কমান্ডার পুলিশ কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এদিন পাকিস্তানি বাহিনী নদীপথে (ইছামতি নদী) লঞ্চযোগে নবাবগঞ্জ থেকে বান্দুরার উত্তর- পশ্চিমে বারুয়াখালী ও দাউদপুর বাজারে যায় এবং সহযোগীদের সহায়তায় প্রথমে তারা বারুয়াখালী বাজারে গিয়ে লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে দাউদপুর বাজার লুণ্ঠন করে তারা বান্দুরা বাজারের নেদুরাম শীলের মিষ্টির দোকানের নিকট পৌছে লঞ্চটির গতি কমিয়ে দেয়। এ-সময় বান্দুরা বাজারে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা কমান্ডার নূরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে অতর্কিতে হানাদার বাহিনীর লঞ্চের ওপর হামলা চালান। এ আক্রমণে অংশ নেন কালীপদ মাস্টার, আব্দুল হালিম, সুরঞ্জন কুমার হালদার, মন্টু সরকার, জর্জ রোজারিও (মাস্টার), শচীন গমেজ, আরমান সিকদার, মো. আলমাছ উদ্দিন, এ্যান গমেজ, আ. করিম, মো. শাহাজউদ্দিন, দেওয়ান আমজাদ হোসেন, মোহাম্মদ মুস্তফা, ফজলুল হক প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা। এ-যুদ্ধে বর্ধনপাড়ার মোহাম্মদ শাহজাহান, ফরিদপুরের সাঈদ আহমদ, হাসনাবাদের এলবার্ট গমেজ এবং দোহার থানার লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এল এম জি সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ যোগ দেয়। সোহরাব হোসেন ইতোমধ্যে ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দোহারের বিভিন্ন যুদ্ধ, বিশেষ করে লটাখোলা যুদ্ধে অসীম সাহসের পরিচয় দেন। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা বান্দুরার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে পাকসেনাদের হতাহত করতে সক্ষম হন। সোহরাব হোসেন পাকসেনাদের লঞ্চে প্রথমে গ্রেনেড চার্জ করেন। লঞ্চের সামনে পজিশন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হানাদার বাহিনীর কমান্ডারসহ ৬ জন সৈন্য ঘটনাস্থলে নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। এরপর লঞ্চের পাকসেনারা দ্রুতবেগে লঞ্চ চালিয়ে নবাবগঞ্জের দিকে পালিয়ে যায়। [মো. আনোয়ার হোসেন ও আব্দুল মালেক সিকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড