বাড়ুইপাড়া গণহত্যা (রাউজান, চট্টগ্রাম)
বাড়ুইপাড়া গণহত্যা (রাউজান, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ১৩ই এপ্রিল। এতে ৪ জন মানুষ শহীদ ও বহু আহত হন।
রাউজানের সবচেয়ে নৃশংসতম গণহত্যা ও শোকাবহ দিন ১৩ই এপ্রিল ১৯৭১। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার চট্টগ্রামের দোর্দণ্ড প্রতাশালী মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ খালেদের নিকট পরাজিত হয়। এ কারণে সে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের দায়ী করে। এমতাবস্থায় ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফজলুল কাদের চৌধুরী ও তাদের এদেশীয় দোসর শান্তি কমিটি-র সদস্য ও রাজাকারদের মাধ্যমে রাউজানে মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু নিধনের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে। ১৩ই এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে তাদের ওপর শুরু হয় দিনব্যাপী হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, জায়গা-জমি দখল ও অর্থ সম্পদ লুটপাট। সেদিন থেকে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক লোক ভারতে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। এদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাউজানের রাস্তার পাশে সুলতানপুর বাড়ুইপাড়া গ্রামে প্রবেশ করে নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। তখন গ্রামের লোকজন দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালাতে থাকে। সে-সময় পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হন লালচন্দ্র দে (পিতা লক্ষ্মীচরণ দে), কুশ চন্দ্র দে (পিতা লক্ষ্মীচরণ দে), রাতুল চন্দ্র শীল (পিতা গুরুদাস শীল) ও রাধাকৃষ্ণ দে (পিতা গৌরহরি দে)। এছাড়া বহু মানুষ আহত হন। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড