বাজালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম)
বাজালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় অক্টোবর মাসে। এ অপারেশনের ফলে ক্যাম্পের রাজাকাররা পালিয়ে যায় এবং বিপুল অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। সুলতান আহমদ কুসুমপুরী বাহিনীর একদল মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলামের নেতৃত্বে এ অপারেশনে অংশ নেন।
ক্যাম্পে ১২ জন রাজাকারের একটি দল ছিল। তাদের কমান্ডার ছিল লাল মিয়া। ক্যাম্পটি গঠিত হওয়ার পর থেকে রাজাকাররা এলাকায় মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ সংঘটিত করতে থাকে। তারা নিয়মিতভাবে হত্যা, গুম, জ্বালাও-পোড়াও, নারীনির্যাতন, লুণ্ঠন ইত্যাদির মাধ্যমে এলাকার মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। ফলে সুলতান আহমদ কুসুমপুরী এমপিএ ক্যাম্পটিতে অপারেশন পরিচালনার জন্য হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলামকে নির্দেশ দেন। অক্টোবরের এক রাতে হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলাম ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল নিয়ে ক্যাম্পে আক্রমণ করলে রাজাকাররা পাল্টা আক্রমণ করে। ফলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ চলে। এক সময় রাজাকাররা অস্ত্র ফেলে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যায়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে ১২টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেলসহ অন্যান্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের দখলে নেন। এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- কমান্ডার হাবিলদার আবু মো. ইসলাম (পিতা হামিদ হোসেন, বরকল, চন্দনাইশ উপজেলা), নায়েক সুজায়েত আলী (পিতা মফজল আহমদ, সাতবাড়িয়া, চন্দনাইশ), আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইছহাক, উত্তর হাশিমপুর, চন্দনাইশ), নায়েক ফয়েজ আহমদ (উত্তর কাঞ্চনা, সাতকানিয়া), আশরাফুল আলম (পিতা এজাহার মিয়া (উত্তর হাশিমপুর), মো. রফিকুল ইসলাম (পিতা গুরা মিয়া, উত্তর গাছবাড়িয়া, চন্দনাইশ; সেনাসদস্য), এ কে এম হারুন (পিতা হাবিবুর রহমান, উত্তর গাছবাড়িয়া; ইপিআর- এর সুবেদার), আইয়ুব আলী (পিতা হামিদ হোসেন (বরকল), দুদু মিয়া (পিতা আবদুর রশিদ, বরকল), এস এম গফুর (পিতা ছৈয়দুল হাকিম, বরকল), মো. আবুল কাশেম (পিতা এনু মিয়া, বরকল), ছাবের আহমদ (পিতা গুরা মিয়া, দোহাজারী, চন্দনাইশ), মো. আবদুল জব্বার (পিতা দুলা মিয়া চৌধুরী, বরকল), হারুন (দোহাজারী), মোস্তফা কামাল (মধ্যম চন্দনাইশ) ও সালাম (সিলেট)। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড