You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে বাঘা উপজেলা (রাজশাহী) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে বাঘা উপজেলা (রাজশাহী)

বাঘা উপজেলা (রাজশাহী) রাজশাহী জেলা শহর থেকে ৪৮ কিমি দূরে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি চারঘাট থানার অংশ ছিল। ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত ছিল না। তবে এ উপজেলার শিক্ষিত জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিল। পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এ অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগ- নেতা নজমুল হক সরকার এমএনএ ও ডা. মো. আলাউদ্দিন এমপিএ নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করার সঙ্গে- সঙ্গে পরদিন থেকে সমগ্র পূর্ব বাংলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)-এ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান জানানো হলে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় বাঘা উপজেলার জনগণও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাতে শরিক হয়।
৭ই মার্চের পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁশের লাঠি এবং লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বাঘা সদরে আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশিদ সরকার মুক্তিকামী জনতাকে লাঠি দিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, চকআমোদপুরের ইজ্জত আলী, ছাতারি গ্রামের আকতার প্রমুখ। একই সঙ্গে উপজেলার সর্বত্র মিছিল-মিটিং চলতে থাকে। মীরগঞ্জ ও আলাইপুর ইপিআর বিওপি থেকে শুরু করে সমগ্র বাঘা উপজেলায় ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক কর্মী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকে। কোথাও-কোথাও স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ানো হয়। এ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার শেখপাড়া, কাজিপাড়া, পানিপিয়া, কাতলামারি লালগোলা ক্যাম্প; মালদা জেলার গৌড়বাগান; শিলিগুড়ির পানিহাটা; বিহারের সিংভূম জেলার চাকুলিয়া ক্যান্টনমেন্ট; উত্তর প্রদেশের দেরাদুন জেলার চাকরাতা ক্যাম্প, টান্ডুয়া ক্যাম্প, পঙ্গা ক্যাম্প ও কিং কমিশন আর্মি একাডেমি; মেঘালয়ের হাফলং প্রভৃতি স্থানে প্রশিক্ষণ প্রহণ করেন। রাজশাহীর পূর্বাঞ্চল এবং নাটোর ও পাবনা জেলার মুক্তিযোদ্ধারা বাঘার পদ্মা নদীর কূল হতে নৌকাযোগে ইপিআর বাহিনী কর্তৃক পরিত্যক্ত খাজুরার থাক বিওপিতে পৌঁছাতেন। এই ট্রানজিট পয়েন্ট হতে তারা নৌকাযোগে ভারতে যেতেন। আবার বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রেও একই পথ ব্যবহার করতেন। এ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- হারুনুর রশিদ সরকার, আবদুস সামাদ, ডা. মো. আজিজুল আলম, মো. শামসুল আরেফিন, মো. সেকেন্দার আলী, মো. মজিবর রহমান, মো. ইছার উল্লাহ, মো. আবদুল খালেক সরকার, আজহার আলী, সিরাজুল ইসলাম (চাঁদ), শফিউর রহমান শফি প্রমুখ।
২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনী দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার প্রতিবাদে এ উপজেলার বাঙালি সৈনিক, ইপিআর, পুলিশ, আনসার, ছাত্র, যুবক, কৃষক শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ-সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ইপিআর বিওপিগুলোকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি চলতে থাকে। ২৬শে মার্চ বিকেলে মীরগঞ্জে ছাত্র-জনতার বিরাট মিছিল বের হয়। “বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ এই স্লোগান দিয়ে মিছিলকারীরা মীরগঞ্জ বিওপিতে এসে ইপিআর বাহিনীর বাঙালি জওয়ানদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানায়। এদিন রাতে মীরগঞ্জ বিওপির প্রধান সুবেদার মেজর সিরাজউদ্দিন লস্করের নির্দেশে তাঁর অধীনস্থ আলাইপুর ও চিলমারি বিওপিতে বাঙালি জওয়ানরা কৌশলে অবাঙালি জওয়ানদের নিরস্ত্র করেন এবং ২৭শে মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি নিজে মীরগঞ্জে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ২৭ ও ২৮শে মার্চ নারায়ণপুর কাচারি, বাঘা হাইস্কুল ও বাঘা মাদ্রাসায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
২৯শে মার্চের পর নুরুন্নবী সরকারের নেতৃত্বে বাঘার একদল প্রতিরোধযোদ্ধা পাবনা থেকে অগ্রসরমাণ হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে সারদা পিএটিসিতে যান। সেখানে তাঁরা ক্যাপ্টেন বজলুর রশিদের বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হন। পাকবাহিনী কর্তৃক রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক সরকার এমএনএ-র হত্যাকাণ্ড এলাকার জনগণকে চরমভাবে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। অনেকেই অস্ত্র সংগ্রহ করতে সারদা পিএটিসিতে আসে। মীরগঞ্জ ইপিআর-এর বিওপির প্রধান সুবেদার মেজর সিরাজউদ্দিন লস্কর এ-সময় তাদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন। তিনি অনেককে পদ্মা নদী পার করার ব্যবস্থা করেন, যাতে তারা ভারত হতে অস্ত্র নিয়ে আসতে পারে। ২৮শে মার্চ তিনি তাঁর অধীনস্থ তিনটি বিওপির জওয়ানদের নিয়ে চারঘাট কোম্পানি হেডকোয়ার্টার্স দখল এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
বাঘা উপজেলা ভারতীয় সীমানার নিকটবর্তী হওয়ায় এ অঞ্চলের প্রতি পাকবাহিনীর বিশেষ নজরদারি ছিল। তাই তারা বাঘা, নারায়ণপুর, পাকুড়িয়া, আলাইপুর, চকরাজাপুর, আড়ানি প্রভৃতি স্থানে বেশ কয়েকটি স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। তবে পাকিস্তানি সেনারা এসব ক্যাম্পে রাতে অবস্থান করত না। তারা সারদার পিএটিসি থেকে এখানে এসে অপারেশন চালাত। এসব ক্যাম্পে রাজাকার, ইপিক্যাফ, বিহারিসহ প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করত।
লালপুরের মৌলভী জালাল, হাবিবুর, নৈয়ব ডাকাত প্রমুখ ছিল পাকবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় দোসর। রাজাকার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিল বিহারি দ্বীন মোহাম্মদ।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ রাতে এডভোকেট নজমুল হক সরকার এমএনএ-কে হত্যা করে। সরেরহাটের শামসুদ্দিন সরকার, নওশাদ আলী সরকার ও আফসার আলী সরকার নামে তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পাকসেনারা এঁদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নওশাদ আলী ও তাঁর চাচাতো ভাই জবান আলীকে হত্যা করে। ২৩শে মে সকালে বিহারি দ্বীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে একদল রাজাকার ও আলবদর একটি টমটম নিয়ে নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক ও ব্যবসায়ী সুদর্শন পাণ্ডাকে আটক করে বাঘা শাহী মসজিদের ক্যাশিয়ার সৈয়দ আলী মিস্ত্রির বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা উভয়কে টমটমে তুলে চারঘাটের নদীর ঘাটে নিয়ে নির্যাতন শেষে হত্যা করে। পাকবাহিনী মিলিক বাঘাতে আক্রমণ চালিয়ে কালু মণ্ডলের গুরুতর অসুস্থ ছেলে আবদুর রহমানকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে তুলে পালং নামক স্থানে নিয়ে হত্যা করে। এরপর তারা নেয়াত আলী নামে এক দিনমজুরকে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধারা আড়ানি রেলব্রিজ ও রাজাকার ক্যাম্প ধ্বংস করার পর পাকবাহিনী তেঁতুলিয়া গ্রামের হিন্দু অধ্যুষিত কামারপাড়ায় অভিযান চালিয়ে রবিদাসকে হত্যা করে।
এ উপজেলায় অবস্থিত ইপিআর বাহিনীর বিওপিগুলোতে ক্যাম্প স্থাপন করে পাকবাহিনীর সহযোগীরা অবস্থান করত।
এসব ক্যাম্পে অবস্থানকারী সহযোগীদের নিয়ে পাকসেনারা নারীনির্যাতন চালাত। তাদের হাত থেকে কিশোরী হতে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা কিংবা বৃদ্ধা নারী কেউই রক্ষা পায়নি। রাজাকার ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার জনগণ নির্যাতনের ভয়ে তাদের যুবতী মেয়েদের অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে রাখত। বাঘা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হারুন-অর- রশীদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া চার মাসের গর্ভবর্তী এক নারীকে কয়েকজন পাকসেনা পাশবিক নির্যাতন করে। পরদিনই তার গর্ভের বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। একই দিন একই এলাকায় কয়েকজন নারী পাকসেনাদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। একই গ্রামের একজন গর্ভবতী মহিলা পাকিস্তানি সেনাদের নির্যাতনের ভয়ে পুকুরপাড়ের জঙ্গলের দিকে পালাতে গিয়ে একটি গর্তের মধ্যে পড়ে যান। তখন আশপাশে মর্টার শেলিং চলছিল। ভয়ে ও যন্ত্রণায় মহিলাটির প্রসব বেদনা ওঠে। তিনি একটি সন্তান প্রসব করেন। কিছুক্ষণ পর মা ও সন্তান উভয়েই মারা যায়। আড়ানি রেলব্রিজ সংলগ্ন রাজাকার ক্যাম্পেও বহু নারী নির্যাতনের শিকার হন। এছাড়া রাজাকারা সরেরহাট গ্রামের নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
পাকসেনা ও তাদের দোসররা এ উপজেলার বহু বাড়িঘরে লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করে। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে তারা সরেরহাটের মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন সরকারের বাড়িতে লুটপাট শেষে আগুন ধরিয়ে দেয়। ২২শে অক্টোবর আড়ানি রেলব্রিজ ধ্বংসের পরদিন তারা বাসুদেবপুর গ্রামটি জ্বালিয়ে দেয়। পাকসেনারা নারায়ণপুর গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাণ্ডাদের বাড়িঘর লুটপাট শেষে আগুন লাগিয়ে বিরাণভূমিতে পরিণত করে। তারা বাঘা সদরের সরকার ও প্রামাণিক পরিবারের বাড়িঘর লুণ্ঠনশেষে আগুন লাগিয়ে দেয়।
হানাদার বাহিনী অক্টোবর মাসের কোনো একদিন ৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে সুলতানপুর গোরস্তানের পাশে গণকবর দেয়। উক্ত স্থানটি সুলতানপুর গোরস্তান গণকবর নামে পরিচিত।
৭ই জুলাই আড়ানি রেল স্টেশন যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে ৪ জন রাজাকার নিহত হয়, ৫ জন মিলিশিয়া ও ২ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। শত্রুপক্ষের ৬টি ৩০৩ রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। ২২শে অক্টোর আড়ানি ব্রিজ অপারেশন – পরিচালিত হয়। এতে ব্রিজটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং কিছুদিনের জন্য রাজশাহী ও পাবনার মধ্যে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। আগস্ট মাসে মুক্তিযোদ্ধারা মীরগঞ্জ বিওপিতে অবস্থিত রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। এ অপারেশনে ৮ জন রাজাকার নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহত হয়। এটি মীরগঞ্জ বিওপি রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন – নামে পরিচিত। ২২শে আগস্ট রাতে সুবেদার মুবাশসারুল ইসলামের নেতৃত্বে এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা ভারত থেকে এসে দ্বিতীয়বার মীরগঞ্জ বিওপি আক্রমণ করেন। রাজাকাররাও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। ২৪শে জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা রাজশাহী শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে বাজুবাঘা বৈদ্যুতিক টাওয়ারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ অভিযানে দুটি টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়। এটি বাজুবাঘা বৈদ্যুতিক টাওয়ার অপারেশন হিসেবে পরিচিত।
২২শে অক্টোবর আড়ানি বাজার রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন পরিচালিত হয়। এতে ক্যাম্পের রাজাকাররা পালিয়ে যায় এবং আড়ানি রেলসেতুটি বিধ্বস্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে বাউশা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন- পরিচালিত হয়। এতে ৫ জন রাজাকার নিহত হয় এবং ৫ জন রাজাকার ও শান্তি কমিটির ২ জন সদস্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দি হয়। রাজাকারদের ১০টি রাইফেল ও ২টি শর্টগান মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। ১৬ই সেপ্টেম্বর রাতে ২৪ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল জনৈক আফসার মাঝির নৌকায় করে বাঘায় আসেন। তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে তারা বাঘা দরগায় অবস্থিত রাজাকার ক্যাম্পটি আক্রমণ করেন। এ অভিযানে ১ জন রাজাকার নিহত হয় এবং তাদের অনেক অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এটি বাঘা দরগা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন নামে পরিচিত। ১৩ই ডিসেম্বর বাঘা উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হলেন- মো. আজাদ আলী, বীর প্রতীক (পিতা মো. আরজান আলী প্রামাণিক, কুশবাড়িয়া)।
এখানকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- সিরাজুল হক (পিতা আবদুর রহমান, কুশাবাড়িয়া), এছার উদ্দিন (পিতা বাহার উদ্দিন, হরিরামপুর), সাইদুর রহমান (পিতা ইব্রাহিম সরকার, খানপুর), রমজান আলী (পিতা ফজল সরকার, মিলিকবাঘা), আলাউদ্দিন (পিতা ইসমাইল হোসেন, আলাইপুর) ও এছাহাক আলী (পিতা সৈয়দ আলী, পাকুরিয়া)। [মো. মোস্তফা কামাল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড