বাঘুটিয়া যুদ্ধ (দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ)
বাঘুটিয়া যুদ্ধ (দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৪ই ডিসেম্বর। এতে কয়েকজন পাকসেনা আহত হয় এবং তাদের নিয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে জামালপুর থেকে পালিয়ে আসা পাকসেনাদের একটি দল পথভ্রষ্ট হয়ে যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাত্রা করে। পাকসেনারা দীর্ঘ পথ হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। দক্ষিণ টাঙ্গাইল থেকে তারা মানিকগঞ্জ মহকুমার চরকাটারীর বাচামারা অভিমুখে যাত্রা করে। চরকাটারীর রশীদ মাস্টার এবং আব্দুল কাদের ভারতে ট্রেনিং শেষে গ্রামে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ জনের একটি দল পাকসেনাদের অনুসরণ করতে থাকে। পাকসেনাদের দলটি চরকাটারী পার হয়ে বাচামারা পৌঁছলে জাহেদালী মুন্সী, আব্দুল বাতেন, বাহেজ মোল্লা ও ওসমান মাস্টারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। চরকাটারী ও বাচামারার মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে পাকসেনাদের ঘিরে ফেলেন এবং গুলি চালান। পাকসেনারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এরপর তারা বাঘুটিয়ার চর অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। এদিকে বাঘুটিয়ার চরে এন্তাজ ডাকাতের নেতৃত্বে একটি বাহিনী গড়ে ওঠে, যা এন্তাজ বাহিনী বা ডাকাত বাহিনী নামে পরিচিত ছিল। এ বাহিনীর নিকট ১০টি রাইফেল ছিল। এর সেকেন্ড-ইন- কমান্ড ছিল হাদারী সেক। বাঘুটিয়ার চরে পৌঁছামাত্র পাকসেনারা এন্তাজ বাহিনীর কবলে পড়ে। এন্তাজ বাহিনীর যোদ্ধারা পাকসেনাদের ওপর উপর্যুপরি গুলি চালায়। পাকসেনারাও পাল্টা গুলি চালায়। চরকাটারী ও বাচামারার মুক্তিযোদ্ধারা এন্তাজ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকসেনারা পিছু হটে যমুনা নদী পার হয়ে কাজীর হাটের (পাবনা) দিকে চলে যায়। এ-যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা আহত হয়। [মো. আমিনুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড