You dont have javascript enabled! Please enable it! বলাইড়হাট যুদ্ধ (পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও) - সংগ্রামের নোটবুক

বলাইড়হাট যুদ্ধ (পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও)

বলাইড়হাট যুদ্ধ (পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসে। পীরগঞ্জ থানা সদর থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মল্লিকপুর ইউনিয়নে বলাইড়হাটের অবস্থান। দক্ষিণাঞ্চলে পাকসেনাদের অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার লক্ষ্যে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতার এ- যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনীর বেলুচ রেজিমেন্ট অংশ নেয়। যুদ্ধে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। অপরপক্ষে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়।
পীরগঞ্জে পাকসেনাদের একটি স্থায়ী ক্যাম্প ছিল। এ ক্যাম্প থেকে তারা পীরগঞ্জের চতুর্দিকে বাংকার তৈরি করে সারাদিন পাহারা দিত ও মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। মুক্তিযোদ্ধারাও পাকসেনাদের গতিবিধি অনুসরণ করে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাদের পর্যুদস্ত করার চেষ্টা করতেন। বলাইড়হাটের সন্নিকটে আদিবাসী সাঁওতালদের বসতি ছিল। তাদের অনেকে ভারতে আশ্রয় নিলে তাদের ফাঁকা বাড়িঘরে আগস্টের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্রশস্ত্রসহ অবস্থান নেন।
পীরগঞ্জ থেকে আসার পথে পাকবাহিনীর একটি দল বলাইড়হাটে আনিস হাওলাদারের নেতৃত্বে লুৎফর ঘুন্টিসহ বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ-সময় ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বাধীন দল ফায়ার করলে এখানে যুদ্ধ শুরু হয়। বিকেল ৪টা থেকে রাত পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। এ- যুদ্ধে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে আব্দুল মকিম, ইব্রাহিম খান, আক্তার, নুরুল, বশির, তালেবুর, আলতাফুর, জমির, আশরাফ, হরি গোপাল, ইকরামুল, নুরুল প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। বলাইড়হাট যুদ্ধে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আহত হন। এ-যুদ্ধে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। আহত জাহাঙ্গীরকে মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর ঘুন্টি রাতে ভারতের সীমানার মধ্যে স্থাপিত মালন ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে বাঘড়গড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বলাইড়হাট যুদ্ধ এ এলাকার যুদ্ধের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত। [মো. আসাদুজ্জামান ও ওসমান গনি]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড