বীর প্রতীক বশির আহমেদ
বশির আহমেদ, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৯) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৯ সালের ৩রা জুলাই ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার দক্ষিণ বল্লভপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছফর আলী খন্দকার ও মাতার নাম নুরুন নাহার বেগম। তাঁর স্ত্রীর নাম মঞ্জুরা বশির।
বশির আহমেদ ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে তিনি দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সৈনিক হিসেবে চাকরি করতেন। সে বছর ন্যাশনাল সার্ভিস ব্যাটালিয়নের সদস্য হিসেবে তাঁর ডিউটি ছিল ঢাকা সেনানিবাসের সিগনাল গেটে।
২৮শে মার্চ তাঁকে গ্রেফতার করে জয়দেবপুর রাজবাড়িতে নেয়া হয় এবং সেখানে পাকবাহিনী তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে। তিনিসহ অন্যান্য বন্দিদের ওপর গ্রেনেড ছোড়া হলেও তিনি বেঁচে যান এবং পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধে বশির আহমেদ হবিগঞ্জ জেলার কালেঙ্গা জঙ্গল ও সিন্দরখাল-কালেঙ্গার সড়ক দিয়ে চলাচলরত পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলায় অংশ নেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর তিনি ও তাঁর দলের মুক্তিযোদ্ধারা সড়কের পার্শ্ববর্তী স্থানে এম্বুশে থেকে সড়ক দিয়ে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ করে গুলি ছোড়েন। এসময় পাকিস্তানি সেনাদলের সামনের সারিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাজাকার ছিল। তারা প্রতিআক্রমণ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত সুবিধা করতে পারেনি। এ-যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন অফিসারসহ ৬০-৭০ জন সেনা নিহত হয়। অক্টোবর মাসে বশির আহমেদ ‘এস’ ফোর্সে যোগ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদ-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং এক সময় তিনি অনারারি ক্যাপ্টেন পদে ভূষিত হন। [এস এম মাহফুজুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড