বরিশাল ক্যাডেট কলেজ গণহত্যা (বাবুগঞ্জ, বরিশাল)
বরিশাল ক্যাডেট কলেজ গণহত্যা (বাবুগঞ্জ, বরিশাল) সংঘটিত হয় ৫ই সেপ্টেম্বর। এতে শতাধিক নিরীহ মানুষ শহীদ হন।
বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পূর্ব পাশে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল (বরিশাল ক্যাডেট কলেজ) অবস্থিত। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী এখানে নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত করে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে পাকবাহিনীর একটি দল বরিশাল ক্যাডেট কলেজে অবস্থান নেয়। পার্শ্ববর্তী চাঁদপাশায় মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত ঘাঁটি ধ্বংস করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য। স্থানীয় রাজাকার ওহাব হাওলাদার, নাজেম কর্মকার, হাসেম বেপারী, নুরু প্রমুখের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানি সৈন্যরা চাঁদপাশা, দেহেরগতি, রহমতপুর, প্রতাপপুর, পাংশাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন চালায়। ৫ই সেপ্টেম্বর রবিবার মোহনগঞ্জের হাটের দিন পাকিস্তানি বাহিনী দূর-দূরান্তের শতাধিক লোক ধরে এনে ক্যাডেট কলেজে জড়ো করে। তাদের বেয়নেট চার্জে হত্যার পর ক্যাডেট কলেজের পেছনে মোহনগঞ্জের রাস্তার পাশে ডোবায় ফেলে দেয়। বেয়নেট চার্জে বেঁচে যাওয়া আবু সৈয়দ আকন এ গণহত্যার একজন প্রত্যদর্শী। তার পিতাকে পাকিস্তানি সৈন্যরা বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে।
বরিশাল ক্যডেট কলেজ গণহত্যায় শতাধিক মানুষ শহীদ হন। তাদের বেশির ভাগকে দূর-দূরান্ত থেকে ধরে এনে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। ১৭ জন শহীদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সেলিম (২০) (পিতা মমিন উদ্দীন প্যাদা, ছাতিয়া, মাধবপাশা), সদরুদ্দিন হাওলাদার (৩৫) (পিতা ইমাম উদ্দীন হাওলাদার, প্রতাপপুর), শাহ আলম সরদার (৪৫) (পাংশা, মাধবপাশা), আবদুল হান্নান জমাদার (৩৫) (পিতা আবদুল গফুর জমাদার, পশ্চিম পাংশা, মাধবপাশা), আবদুর রাজ্জাক জমাদার (৩০) (পিতা আবদুল গফুর জমাদার, পশ্চিম পাংশা, মাধবপাশা), আবু তালেব আকন (৬০) (পিতা উমার আলী আকন, বকশীরচর, চাঁদপাশা), বেলায়েত আলী খান (৫০) (পিতা নুরু খান, ছাতিয়া, মাধবপাশা), ধলু বয়াতী (৪০) প্রতাপপুর), নুরু মাতুব্বর (৪৫) (পাংশা, মাধবপাশা), মকবুল সরদার (৩৫) (বকশীরচর, চাঁদপাশা), মুজাহার সরদার (বকশীরচর, চাঁদপাশা), হাসান আলী ফকির, জয়নাল, শাহাজুদ্দিন, জমিলা ও ওয়াহেদ মুন্সির ২ মেয়ে। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড