You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক ফয়জুর রহমান ফুল - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক ফয়জুর রহমান ফুল

ফয়জুর রহমান ফুল, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৩) কাদের সিদ্দিকীর বাহিনীর যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৩ সালে টাঙ্গাইল জেলা শহরের দিঘুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী মনসুর আহমদ এবং মাতার নাম মাহফুজা খাতুন।
ফয়জুর রহমান ফুল ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সামরিক বাহিনীর চাকরিতে থাকাকালে বাঙালি সেনাদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিদ্বেষ ও বৈষম্যমূলক আচরণ তাঁকে খুবই মর্মাহত করে। ফলে ১৯৬২ সালে তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন। এরপর টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজে ভর্তি হয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ – তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করে। তিনি কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তমএর বাহিনীতে যোগ দিয়ে বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধ, এম্বুশ ও গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ডিসেম্বরে পাকিস্তানি হানাদারদের দখল থেকে ঢাকার পতন ঘটাতে ভারতীয় ছত্রীসেনাদের ঢাকার আশেপাশে সুবিধাজনক স্থানে অবতরণের সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে কাদেরিয়া বাহিনী-র ওপর বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ইতোমধ্যে বেশকিছু পাকসেনা পশ্চাদপসরণ করে এলেঙ্গা ও ঘাটাইলে সমবেত হয়। ফলে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘাটাইলের ব্রাহ্মণশাসন ও মোঘলপাড়া এলাকায় ছত্রীসেনা নামানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কাদের সিদ্দিকীর বাহিনী ৩রা ডিসেম্বর সমবেত পাকবাহিনীর ওপর সমন্বিতভাবে তীব্র আক্রমণ পরিচালনা করে। ফয়জুর রহমান ফুল এ আক্রমণে বীরত্বপূর্ণ ও সাহসী ভূমিকা রাখেন। তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে হঠাৎ একটি গোলা এসে ফয়জুর রহমান ফুলের ওপরে পড়ে। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশপ্রেম ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান ফুল-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ১ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম খালেদা রহমান। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড