ফকিরবাড়ি বধ্যভূমি (কুমিল্লা আদর্শ সদর)
ফকিরবাড়ি বধ্যভূমি (কুমিল্লা আদর্শ সদর) রসুলপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধকালে শতাধিক লোককে এ বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুরের ফকিরবাড়ি ছিল হানাদার বাহিনীর অন্যতম বধ্যভূমি। উত্তর দিকে কুমিল্লা রেলস্টেশনের পরের স্টেশন রসুলপুর। এ স্টেশনের ২-৩ কিলোমিটার পূর্বে ভারতীয় সীমান্ত। সেখানে মেলাঘরে ছিল ২নং সেক্টরের সদর দপ্তর। স্থানটির গুরুত্ব বিচার করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রসুলপুরে ক্যাম্প স্থাপন করে। স্টেশনের দক্ষিণপাশেই ফকিরবাড়ি। সেখানে রয়েছে হজরত জালাল শাহ মনিপুরীর মাজার। মাজারের পাশেই উঁচু ভূমিতে হানাদার বাহিনীর বধ্যভূমি। পাকিস্তানি বাহিনী ফকিরহাট রেলস্টেশন, রসুলপুর বাজার, ঈদগাহ সহ চারপাশে অসংখ্য বাঙ্কার খনন করে ক্যাম্প সুরক্ষা করে। এখানে নির্যাতন শেষে রাজাকারদের মাধ্যমে আটককৃত লোকদের দ্বারা কবর খোঁড়া হতো এবং তাদের সেখানে নামিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে মাটিচাপা দিত। তারা রাজাপুর থেকে ১৭ জন কর্মকারকে ধরে এনে স্বখননকৃত কবরে মাটিচাপা দেয়। এখানে শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর বধ্যভূমি এলাকার মাটি সমতল করার সময় মানুষের অসংখ্য হাড়গোড় উঠে আসে। সেসব পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়া হয়। বর্তমানে বধ্যভূমিটি কৃষি জমি। [মামুন সিদ্দিকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড