You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.04 | পাগলা পুল যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

পাগলা পুল যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর)

পাগলা পুল যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর) সংঘটিত হয় ৪ঠা নভেম্বর। এ-যুদ্ধ রামদেবপুর মাঠ যুদ্ধ নামেও পরিচিত। যুদ্ধে ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়।
পাকসেনাদের বামুন্দি ক্যাম্প থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে পাগলা পুল অবস্থিত। পাগলা পুল যুদ্ধে এতদঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মামুনুর রশীদ, মোফাজ্জেল হোসেন, আব্দুর রহমান ও নজরুল। ভারতের ফুলবাড়ি এবং শিকারপুর একশন ক্যাম্প থেকে পরিকল্পনা করে অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। করমদি ও পলাশিপাড়ার মাঝামাঝি রামদেবপুর মাঠের কাছে পাগলা পুলের দুপাশে তাঁরা সমবেত হন এবং বামুন্দি ক্যাম্প থেকে টহলে আসা পাকসেনাদের আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। বাদিয়াপাড়ার আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ তেঁতুলবাড়িয়া থেকে গরীবপুর পর্যন্ত পজিশন গ্রহণ করে। মোফাজ্জেল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ জন মুজিববাহিনীর সদস্যও এ এলাকায় অবস্থান নেন। তেঁতুলবাড়িয়ার চেয়ারম্যান বাড়ির কাছে অবস্থান নেয় সিন্দুরকৌটার নজরুলের নেতৃত্বে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার আরেকটি গ্রুপ। মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার দলটি আক্রমণের মূল দায়িত্ব নিয়ে পাগলা পুলের দুপাশে নিচু জলাভূমিতে পজিশন নেয়। বামুন্দি ক্যাম্প থেকে পাকসেনা এবং রাজাকারদের এক বহর সকাল ১০টার দিকে ৩ ইঞ্চি মর্টারসহ সশস্ত্র অবস্থায় পায়ে হেঁটে পাগলা পুল অতিক্রম করে। মর্টারের শেল বহনকারী সৈন্য পুল পার হবার আগেই মোজাম্মেল হকের এলএমজি গর্জে ওঠে। শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাবর্ষণ। মোট ৮ জন পাকসেনা যুদ্ধে নিহত হয়। হানাদারদের প্রতিআক্রমণের মুখে দুঘণ্টা যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। এ-যুদ্ধে কোনো মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হননি। [রফিকুর রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড