You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক নূরুল আজিম চৌধুরী - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক নূরুল আজিম চৌধুরী

নূরুল আজিম চৌধুরী, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৩) সুবেদার মেজর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩৩ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার গোমদস্তি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আমির হোসেন চৌধুরী এবং মাতার নাম ফরিদা খাতুন। নূরুল আজিম চৌধুরী ১৯৫০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম ইবিআরসি থেকে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নিযুক্ত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাক- ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি সুবেদার মেজর পদমর্যাদায় ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের টাঙ্গাইল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরির সময় তিনি পাকিস্তান স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ এবং এয়ার ইনটেলিজেন্সে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ কালরাতে বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরুর পরপর নূরুল আজিম মেজর কে এম সফিউল্লাহর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। নরসিংদীর বেলাবো ও রায়পুরাসহ কিশোরগঞ্জ জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ২৭শে এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ- যুদ্ধে মেজর কে এম সফিউল্লাহ এবং ক্যাপ্টেন নাসিমও অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর পাকবাহিনী কামানের গোলা নিক্ষেপ করতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা জবাব দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে গোলাবারুদ শেষ হয়ে যায়। শুরু হয় হাতাহাতি যুদ্ধ। নূরুল আজিম চৌধুরী এ-সময় অত্যন্ত ক্ষিপ্রতা ও নৈপুণ্যের সঙ্গে অসংখ্য শত্রুসৈন্য হত্যা করেন। এছাড়াও তিনি ৩ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নূরুল আজিম চৌধুরীকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তীতে তিনি পর্যায়ক্রমিক পদোন্নতি পেয়ে অনারারি ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। তিনি ৪ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম ছানোয়ারা বেগম। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড