মুক্তিযুদ্ধে নাগেশ্বরী উপজেলা (কুড়িগ্রাম)
নাগেশ্বরী উপজেলা (কুড়িগ্রাম) কুড়িগ্রাম জেলার প্রাচীনতম থানা। ১৮৭৫ সালে কুড়িগ্রাম মহকুমা প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকে এ থানার অস্তিত্ব ছিল। ব্ৰহ্মপুত্র নদ নাগেশ্বরীর নারায়ণপুর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। দুধকুমার, সংকোশ, গঙ্গাধর, ফুলকুমার নদীসহ অনেক নদী, খাল, বিল অধ্যুষিত জনপদ নাগেশ্বরী। এর পূর্বদিকে ভারতের আসাম রাজ্য ও উত্তর-পশ্চিম দিকে পশ্চিমবঙ্গ। ১৯৭১ সালে নাগেশ্বরীর ইউনিয়নসমূহ ছিল এরূপ- নাগেশ্বরী সদর, বেরুবাড়ী, বামনডাঙ্গা, হাসনাবাদ, সন্তোষপুর, কালিগঞ্জ, কচাকাটা, রায়গঞ্জ, রামখানা, নুনখাওয়া, কেদার, ভিতরবন্দ, নেওয়াশী, বল্লভেরখাস ও নারায়ণপুর।
নাগেশ্বরী থানার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় সশস্ত্র সংগ্রামীদের আশ্রয়স্থল ছিল এ জনপদ। ষাটের দশকে পাকিস্তান রাষ্ট্রে ৬ ও ১১ দফার সংগ্রামেও এ থানার মানুষ সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত ১৯৭০-এর নির্বাচনে এখান থেকে মোজাহার হোসেন চৌধুরী এমএনএ এবং সামসুল হক চৌধুরী এমপিএ নির্বাচিত হন। এ নির্বাচন পাকিস্তানি শাসন- শোষণের বিরুদ্ধে এলাকার ছাত্র, যুবক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করে। ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের সভা ইয়াহিয়া সরকার কর্তৃক স্থগিতের প্রতিবাদে নাগেশ্বরী থানা সদরের ছাত্রজনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর সারাদেশের মতো নাগেশ্বরীতেও প্রতিদিন প্রতিবাদ মিছিল-সমাবেশ হতে থাকে। সংগ্রামের ঢেউ থানার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পৌঁছে।
৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে নির্দেশনা পেয়ে মোজাহার হোসেন চৌধুরী এমএনএ-এর নেতৃত্বে থানা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন ডা. ওয়াসেক (আওয়ামী লীগ~), খতিবর ভেন্ডার, আ. কাদের বিএসসি (ন্যাপ~), সুব্রত কুমার ভট্টাচার্য (ন্যাপ), শ্যামল কুমার সেন (আওয়ামী লীগ), আ. রহমান (আওয়ামী লীগ), আব্দুস ছাত্তার (হোটেল মালিক), নজরল ইসলাম খন্দকার (আওয়ামী লীগ), হাসেম কাসারিয়া (আওয়ামী লীগ), আ. সামাদ বিএসসি (আওয়ামী লীগ), মাদু ডাক্তার (আওয়ামী লীগ), ছাত্রলীগ-এর সোহরাব হোসেন, মোজাম্মেল হক প্রধান, মোজাম্মেল হক সরকার, নুরুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম বাবলু, ছাত্র ইউনিয়ন- নেতা বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।
নাগেশ্বরীতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ক্যাপ্টেন নওয়াজিশ উদ্দিনের নেতৃত্বে ইপিআর সদস্যদের নিয়ে কয়েকটি প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তোলা হয়। এ-রকম একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল নাগেশ্বরী ফুটবল মাঠে। সিও অফিসের পেছনে স্থাপিত একটি ক্যাম্পে ডা. ওয়াসেক, আনসারের পক্ষে কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন, কবির ও আনিছ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। ছাত্র ইউনিয়ন নেতা নূরল ইসলামের নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডের বাসায় ৩০ জন ছাত্র- তরুণ মিলে যুবশিবির স্থাপন করে। এখান থেকে প্রতিদিন বাজার এলাকায় মিছিল, পথসভা, মশাল মিছিল ও পোস্টারিং করা হতো।
নাগেশ্বরী এলাকা ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের সাহেবগঞ্জ সাব- সেক্টরের অধীন। এখানে মুক্তিবাহিনী, মিত্রবাহিনী, মুজিব বাহিনী এবং ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর অংশগ্রহণ ছিল। ক্যাপ্টেন নওয়াজিশ উদ্দিন, লে. সামাদ, লে. আব্দুল্যাহ, সুবেদার বোরহান, সুবেদার আরব আলী, ইউ কে চিং মারমা, বীর বিক্রম, হারুন-অর রশীদ লাল, বেলায়েত হোসেন, নান্নু হাজী, সামশুল হক, মোজাম্মেল সরকার, মুজিব বাহিনীর আখতারুজ্জামান মণ্ডলসহ অনেকে যোদ্ধা ও কমান্ডার হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
নাগেশ্বরীর বীর জনতা পাকবাহিনীর জন্য ধরলা নদী অতিক্রম করে নাগেশ্বরী দখল করা কঠিন করে তোলে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর কুড়িগ্রাম শহর পাকিস্তানিরা দখল করে নিলেও তারা ধরলা অতিক্রম করতে পারেনি। তবু তারা প্রায় দেড় মাস ধরে নানাভাবে নাগেশ্বরীতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। ক্যাপ্টেন নওয়াজিশ উদ্দিন ৫ই এপ্রিল কুড়িগ্রাম থেকে সামরিক হেডকোয়ার্টার্স নাগেশ্বরীতে স্থানান্তর করার পর জনতার মাঝে সাহস ও লড়াই করার মানসিকতা সৃষ্টি হয়। তাঁর নেতৃত্বে কুড়িগ্রাম থেকে অগ্রসরমাণ পাকবাহিনীকে ধরলা নদীর অপর পাড়ে ২৬শে মে পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা হয়। সেখানে মূলত ইপিআর, আনসার ও মোজাহিদ বাহিনীর সৈনিকেরা ছাত্র-যুবকদের সহায়তায় যুদ্ধ চালিয়ে যান।
২৭শে মে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পাকবাহিনী নাগেশ্বরীতে অনুপ্রবেশ করে। তারা নাগেশ্বরীর দখল নিয়ে থানায় মূল ক্যাম্প স্থাপন করে। পাশাপাশি নাগেশ্বরী ডিএম একাডেমি স্কুল প্রাঙ্গণ এবং ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা বেলায়েত হোসেনের বাড়ি দখল করে সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করে। এছাড়া রায়গঞ্জ হাসপাতাল ও বাজার এলাকায়ও তারা ক্যাম্প তৈরি করে।
মহকুমা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিল পনির উদ্দিন আহমেদ। নাগেশ্বরীর সাইফুর রহমান হাজী ছিল মুসলিম লীগ-এর নেতা ও মহকুমা শান্তি কমিটির সহ-সভাপতি জামায়াত নেতা ভিতরবন্দের খন্দকার শামসুল হক ছিল এর সম্পাদক। এ দুজনের নেতৃত্বে নাগেশ্বরীতে শান্তি কমিটি পরিচালিত হতো। শান্তি কমিটির থানা সভাপতি ছিল নাগেশ্বরী কলেজের অধ্যক্ষ মসীহ্ উদ্দিন আনছারী। সহ- সভাপতি ছিল উমর আলী আহমেদ। সদস্যদের মধ্যে ছিল আদু খান, নুরল মোক্তার, শাহাজান ব্যাপারী, আব্দুল হক প্রধান, আছির আলী মিয়া, মাজাহারুল ইসলাম, আসমত ব্যাপারী, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, আনসার মুন্সি, শামসুদ্দিন মণ্ডল, হাবিবুর রহমান, জসিমুদ্দিন, লুৎফর রহমান খন্দকার, রহিমুল্ল্যাহ, আহাম্মদ মোল্লা, অদর দর্জি, মতিয়ার রহমান, খয়বর আলী, সৈয়দ, মকবুল হোসেন এবং জয়নাল আবেদীন মেকার। জয়নাল মেকার ছিল নৃশংস খুনি। সে পাকিস্তানিদের দ্বারা ক্যাম্পে নারীনির্যাতনের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করত। জয়নাল মেকার নীলুর খামার গণহত্যার অন্যতম সহযোগী ছিল। এদের প্ররোচণা ও উদ্যোগে অন্য রাজাকার ও দালালরা এলাকায় ব্যাপক নৃশংসতা পরিচালনা করে। নাগেশ্বরী থানায় ৪ শতাধিক বেতনভুক রাজাকার ছিল।
পাকবাহিনী অনুপ্রবেশের পর হিন্দু-অধ্যুষিত নাগেশ্বরীতে প্রথমদিনেই শতাধিক বাড়ি ও দোকান জ্বালিয়ে দেয়। এরপর ৬ মাসের মধ্যে সগস্রাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে বিপুলসংখ্যক পাকসেনার সমাবেশ ছিল। এখানে পাকবাহিনীর নির্যাতন, নিষ্ঠুরতাও ছিল সীমাহীন। পাকবাহিনী নীলুর খামার ছাড়া হাসনাবাদ, বেরুবাড়ী, দক্ষিণ ব্যাপারীরহাট প্রভৃতি স্থানে গণহত্যা চালায়।
১৬ই নভেম্বর নীলুর খামার গণহত্যায় পাকবাহিনী ৭৯ জন নিরপরাধ মানুষকে গুলি ও বেয়নেট দ্বারা খুঁচিয়ে হত্যা করে। তাদের এখানে গণকবর দেয়া হয়। ১৯শে নভেম্বর বেরুবাড়ী যুদ্ধের পর পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে বেরুবাড়ীর দুধকুমার নদীর পাড়ের গোটা বেরুবাড়ী গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। শুধু গ্রাম জ্বালিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা গ্রামে নিষ্ঠুর গণহত্যাও চালায়। বেরুবাড়ী গণহত্যা নামে পরিচিত এ হত্যাকাণ্ডে ২৫ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে পাকবাহিনী ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।
নাগেশ্বরীতে পাকবাহিনীর মূল ক্যাম্প ছিল থানায়। সেখানে একটি বড় কুয়া ছিল। পাকবাহিনী বাঙালিদের হত্যা করে লাশ কুয়াতে ফেলে দিত। প্রতিটি পাকিস্তানি ক্যাম্প ছিল এক-একটি নির্যাতন শিবির। নাগেশ্বরী থানা কম্পাউন্ড, রায়গঞ্জ স্কুল ও হাসপাতাল, বেরুবাড়ী, দক্ষিণ ব্যাপারী হাট এলাকায় তাদের নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে পাকিস্তানিরা নাগেশ্বরী থানায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়। তারা যত্রতত্র লাশ ফেলে রাখত। নাগেশ্বরী উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গণকবর ও বধ্যভূমি রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নাগেশ্বরী ৩৬ শহীদের বধ্যভূমি ও গণকবর (শহীদ মিনার বধ্যভূমি ও গণকবর নামে পরিচিত), কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠ গণকবর, ভিতরবন্দ ইউনিয়নের চন্ডিপুর গণকবর, নাগেশ্বরী- ঢাকা প্রধান সড়ক গণকবর, কুড়িগ্রাম ফেরিঘাট থেকে নাগেশ্বরী প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত চন্ডিপুর গণকবর, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চর বেরুবাড়ী গণকবর, নাগেশ্বরী ইউনিয়নের বলদিটারী গণকবর, নাগেশ্বরী ইউনিয়নের চামটারপার গ্রামের (বর্তমান উপজেলা হাসপাতালের পুকুর সংলগ্ন) ইঁদারা গণকবর, নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর সীমান্ত দেয়ালের সরবেশ মন্ডলের বাড়ির কাছে সুপারি বাগান গণকবর, সন্তোষপুর ইউনিয়ন নীলুর খামার সাতানীহ্যাল্লা গণকবর, হাসনাবাদ ইউনিয়নের ব্যাপারীহাট গণকবর, দক্ষিণ ব্যাপারীর হাট পাকা রাস্তার ধারের ইঁদারার ধ্বংসাবশেষ গণকবর এবং নাগেশ্বরী ইউনিয়নের পশ্চিম নাগেশ্বরী গণকবর।
পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ জোরদার হয় আগস্টের পর। এর পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে মূলত রেকি ও ছোট-ছোট অপারেশন পরিচালনা করা হতো
অক্টোবরে নাগেশ্বরীর গাগলায় ইপিক্যাফ (EPCAF-East Pakistan Civil Armed Force)-এর ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেন। ইপিক্যাপ আক্রমণে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয়।
২৩শে অক্টোবর পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণার উদ্দেশ্যে মহকুমা শান্তি কমিটির সভাপতি পনির উদ্দিন আহমেদ নাগেশ্বরী ফুটবল মাঠের জনসভায় যোগ দেয়। সভার সভাপতি ছিল অদু খান। অতিথি ছিল ভুরুঙ্গামারীর অধ্যক্ষ কমর উদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে অতর্কিতে আক্রমণ করেন। এতে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। পনির উদ্দিনসহ অনেকে আহত হয়।
কোম্পানি কমান্ডার মুহম্মদ শামসুল হকের নেতৃত্বে ১৯শে নভেম্বর বেরুবাড়ী যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এখানে ২৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও ৬০ জন আহত হয়।
২০শে নভেম্বর ঐতিহাসিক রায়গঞ্জ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ- যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন। রায়গঞ্জ যুদ্ধে লে. আবু মঈন মো. আসফাকুস সামাদ, বীর উত্তম শহীদ হন। পক্ষান্তরে পাকবাহিনীর ৫০০-র মতো সৈন্য নিহত হয়। ২৭শে নভেম্বর উত্তর বেপারীহাটে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর প্রবল যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে দুই সহদোর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ও আকবর হোসেন এবং কাঁঠালবাড়ীর আব্দুল আজিজ শহীদ হন। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাকবাহিনী কুড়িগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। ২৯শে নভেম্বর নাগেশ্বরী থানা পাকহানাদার মুক্ত হয়।
নাগেশ্বরী উপজেলার যেসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম জানা গেছে, তাঁরা হলেন— মিজানুর রহমান, নূর মোহাম্মদ আলী (পিতা আয়াত আলী ডাক্তার, বাঘডাঙ্গা), আসাদ উল্ল্যাহ (পিতা জামাল উদ্দিন সরকার, মধুর হাইল্যা), রইচ উদ্দিন, আব্দুল ওয়াহাব প্রধান (পিতা ফজলার রহমান প্রধান, আনছার হাট), আনসার আলী (পিতা শরিয়ত উল্লাহ, বাঘডাঙ্গা), কেশর উদ্দীন, আবুল হোসেন, আকবর হোসেন, শুকুর আলী (পিতা জালু শেখ, চরবলরামপুর, মাদারগঞ্জ), জয়নাল আবেদীন, আফান আলী, হযরত আলী, আমিনুর রহমান সরদার (পিতা ইজ্জত উল্যাহ সরদার, শালমার), সিরাজুল ইসলাম এবং আলী হোসেন।
নাগেশ্বরী উপজেলার বেশকিছু সড়কের নামকরণ করা হয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। যেমন নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজার মসজিদ পর্যন্ত শহীদ মিজানুর রহমান সড়ক, নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড রহমান ডাক্তারের দোকান থেকে নেওয়াশী ইউনিয়নের রাস্তা শহীদ আফান আলী সড়ক, মানিক মিয়ার মোড়ের বটগাছের তলা থেকে পূর্ব পার্শ্বের রাস্তা শহীদ কেশর উদ্দিন সড়ক, বটতলা থেকে সাপখাওয়া মোজাহার চৌধুরীর বাড়ি পর্যন্ত শহীদ রইচ উদ্দিন সড়ক, গাগলা মোড় থেকে পুরাতন বাজার পর্যন্ত শহীদ আসাদ সড়ক, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বেরুবাড়ী পর্যন্ত শহীদ শুকুর আলী সড়ক, বল্লভপুর মোড় থেকে রামখানা পর্যন্ত শহীদ আবুল হোসেন সড়ক, আলেপের তেপতি থেকে রামখানা শহীদ আলী হোসেন রোড, চন্ডীপুর কদমতলা থেকে হাসনাবাদ শহীদ সিরাজুল ইসলাম সড়ক, মালভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বল্লভপুর রোড পর্যন্ত শহীদ নুর মোহাম্মদ সড়ক, বাজার মসজিদ থেকে পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত শহীদ আনসার আলী সড়ক, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে কালীগঞ্জ রোড পর্যন্ত শহীদ আমিনুল ইসলাম সড়ক। এছাড়া শহরে রয়েছে শহীদ জয়নাল আবেদনী সড়ক। [শহীদুল ইসলাম বাবলু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড