You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.18 | নওগাঁ সদর হানাদারমুক্ত করা (নওগাঁ সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

নওগাঁ সদর হানাদারমুক্ত করা (নওগাঁ সদর)

নওগাঁ সদর হানাদারমুক্ত করা (নওগাঁ সদর) ১৮ই ডিসেম্বর দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত হয়ে মিত্রবাহিনী-র মেজর চন্দ্রশেখর এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে অগ্রসরমাণ পি বি রায়ের নেতৃত্বাধীন দল একত্র হয়। এঁদের সঙ্গে যোগ দেয় মুক্তিযোদ্ধাদের বিশাল একটি দল। সকলের গন্তব্য নওগাঁ। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস এস সিরাজুল ইসলাম ভারতীয় সিগন্যাল কোরের সুবেদার মেজর পরমার সিংএর নির্দেশমতো ১৩ই ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলীর অফিসের দোতলায় ওয়ারলেস সেটসহ ৭ জনের একটি দল নিয়ে অবস্থান নেন। ১৪ই ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি দল শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। তাঁদের একটি দল পুরাতন হাসপাতাল রোডের দিকে অগ্রসর হয়। গলির মধ্যে পাকিস্তানি সেনারা ভয়ে কাঁপছিল। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বলে, “মুক্তি ভাই, তোম লোগ মুসলিম, হাম ভি মুসলিম ইয়ার। আও মেরে গলে লাগ যাও।’ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা তাদের হত্যা করতে উদ্যত হয়। কিন্তু অন্যদের হস্তক্ষেপে তারা নিবৃত্ত হয়। পাক সৈন্যদের হাত ওপরে তুলে কে ডি স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সকলের অপেক্ষা কখন পাকসেনারা আত্মসমর্পণ করে। এভাবে ৩ দিন অতিবাহিত হয়। সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স থেকে সংবাদ আসে, মিত্রবাহিনীর মেজর চন্দ্রশেখর অফিসার ও জোয়ানদের সঙ্গে নিয়ে বগুড়া থেকে নওগাঁ রওনা হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কমান্ডার গিয়াস ও জামাল চৌধুরী কে ডি স্কুল মাঠে জমায়েত হন। নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মারগুব মোর্শেদ মিত্রবাহিনীসহ সকলকে স্বাগত জানান। সেখানেই ২ হাজার পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে কে ডি স্কুল পর্যন্ত রাস্তার দুধারে পাকসেনারা মাটিতে অস্ত্র ফেলে অবনত মস্তকে দাঁড়িয়ে থাকে। মেজর চন্দ্রশেখর কে ডি স্কুল, ডিগ্রি কলেজ ও হাসপাতাল মাঠে রাখা পাকসেনাদের সকল অস্ত্রশস্ত্র, সাজোয়া যানবাহন, যাবতীয় রসদ ও সম্পদ বুঝে নেন। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হলেও নওগাঁ মুক্ত হয় ১৮ই ডিসেম্বর। [আইয়ুব হোসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড