You dont have javascript enabled! Please enable it! ধর্মঘর বাজার যুদ্ধ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

ধর্মঘর বাজার যুদ্ধ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)

ধর্মঘর বাজার যুদ্ধ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় জুলাই মাসের শেষদিকে। এতে ১৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরপক্ষে ৮-১০ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মাধবপুর হবিগঞ্জ মহকুমার সর্বশেষ তথা সর্বদক্ষিণের একটি থানা। থানা সদর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থিত ধর্মঘর বাজার। এখানে পাকিস্তান বাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। তাতে পাকসেনাদের এক কোম্পানি সৈন্য ছিল। এই ক্যাম্পের বিপরীত দিকে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সিদাই ক্যাম্প। ক্যাম্প অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন। তিনি ধর্মঘর বাজার আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। দিন- তারিখ নির্ধারণ করে রেকির কাজ করাও সম্পন্ন হয় ৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সমন্বয়ে এ আক্রমণ পরিচালনার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। তারপর নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা গন্তব্য অভিমুখে যাত্রা করেন।
রাত তখন ৮টা। অনেক আগে থেকেই বৃষ্টি নেমেছে। প্ৰচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ধর্মঘর বাজারের পূর্বপাশে একটি সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নেন। কিন্তু আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণের সঙ্গে-সঙ্গেই পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে। মুক্তিসেনারাও পাল্টা আক্রমণ করেন। শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ। দীর্ঘক্ষণ এ যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে ১ জন মেজরসহ ১৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষেও ৮-১০ জন শহীদ হন। এ যুদ্ধে অনিয়মিত বাহিনীর যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে খুরশেদ আহমদ খান, আসকির মিয়া, নুর উদ্দিন, নূরুল ইসলাম, মতি ও মোহাম্মদ আলীর নাম উল্লেখযোগ্য। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড