You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক দুদু মিয়া - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক দুদু মিয়া

দুদু মিয়া, বীর প্রতীক (১৯২৯-২০০০) নায়েক ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯২৯ সালে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত পটিয়া উপজেলার গোবিন্দারখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম রহমান খাতুন এবং পিতার নাম বদিউর রহমান।
চাকরি জীবনের শুরুতে দুদু মিয়া ১৯৫০ সালে পাকিস্তান পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে ইপিআর বাহিনী পুনর্গঠনের সময় ১৯৫৯ সালে তিনি এ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাক-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা বর্ডারে কর্মরত ছিলেন। বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যা শুরু হলে তিনি বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। আবু ওসমান চৌধুরীর কমান্ডে ভোমরা, যশোর ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। এরপর তিনি ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন রেইড, এম্বুশ ও গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। দুদু মিয়া জুন মাসে ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হন এবং ক্যাপ্টেন হাফিজের নেতৃত্বে তেলঢালায় ‘জেড’ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত হন। ৩১শে জুলাই তিনি বিখ্যাত ধানুয়া-কামালপুর যুদ্ধে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করেন। এক পর্যায়ে শত্রুপক্ষের গুলির আঘাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন এবং ভারতের লক্ষ্ণৌ সামরিক হাসপাতালে দীর্ঘকাল চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে স্বাধীনতার পর দেশে ফেরেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নায়েক দুদু মিয়াকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনি ১ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মেহেরাজ বেগম। ২০০০ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড