দড়িলাপাং গণহত্যা (নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
দড়িলাপাং গণহত্যা (নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ১৪ই এপ্রিল দুপুরে সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ৬ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
১৪ই এপ্রিল দুপুর ১২:৩০টার দিকে পাকহানাদার বাহিনীর দুটি নৌ-জাহাজ মানিকনগর থেকে দড়িগাও এসে মেঘনা- তিতাস নদীর মোহনায় নোঙ্গর করে। এ খবর পেয়ে কমান্ডার ক্যাপ্টেন আ. গাফ্ফার (গোকর্ণঘাট)-এর নেতৃত্বে আ. হালিম (আলিয়াবাদ) ও আ. লতিফসহ ৮-৯ জন মুক্তিযোদ্ধা দড়িলাপাং গ্রামের পশ্চিম মাথায় বটগাছের কাছে বাঁশঝাড়ের আড়ালে অবস্থান নেন। বিকেল ২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা মর্টার দিয়ে হানাদার বাহিনীর নৌ-জাহাজ আক্রমণ করেন। মর্টারের আঘাতে একটি জাহাজ একদিকে কাত হয়ে যায় এবং জাহাজের একাংশে আগুন লাগে। হানাদার বাহিনী অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দ্বারা আগুন নিভিয়ে জাহাজ থেকে গানবোটযোগে দড়িলাপাং গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে তিতাস নদী পাড় হয়ে গ্রামে প্রবেশ করে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাদের প্রচণ্ড গোলাগুলিতে গ্রামবাসীরা ছুটাছুটি করে আলমনগর, রতনপুর, যশাওয়াতা, লহরী ও কালঘরা গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে থাকে। বিকেল ৩টার সময় হানাদার বাহিনী বিমান হামলা শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধাদের দলটি পিছু হটে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। মর্টার ও বিমানের বোমা হামলার সময় দড়িগাঁও ও নবীপুরের সীমানার সংযোগস্থলে একটি সরকারি খাদ্যগুদামের আড়ালে কয়েকজন সাধারণ মানুষ আত্মগোপন করলে দড়িলাপাং গ্রামের ৪ জনসহ মোট ৬ জন বিমানের বোমার আঘাতে শহীদ হন। বর্তমানে খাদ্যগুদামটি নদীভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। এ গণহত্যায় শহীদ ৬ জন গ্রামবাসী হলেন- দড়িলাপাং গ্রামের ধন মিয়া (২০) (পিতা হাজী মো. সুলতান), আখের আলী (২০) (পিতা গর্জু মিয়া), দুই সহোদার আ. মালেক (৪০) ও মো. গণি (৩৫) (পিতা আমিন উদ্দিন ওরফে মাতু মিয়া), অজ্ঞাতনামা এক মহিলা (স্বামী দুদু মৌলবী, লাপাং) ও হাবিজ মিয়া (৪০) (পিতা তাইজুদ্দিন, আশ্রবপুর)। [মো. শাহজাহান সোহেল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড