You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.14 | দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গণহত্যা ((নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) - সংগ্রামের নোটবুক

দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গণহত্যা ((নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গণহত্যা ((নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ১৪ই এপ্রিল বিকেলে সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ৭ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
১৪ই এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা মেঘনা-তিতাস নদীর মোহনা দড়িগাও-এ নোঙ্গররত হানাদার বাহিনীর নৌ-জাহাজ আক্রমণ করেন। এতে হানাদারদের একটি জাহাজ একদিকে কাত হয়ে যায় এবং জাহাজের একাংশে আগুন লেগে যায়। হানাদার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে আশপাশের গ্রামগুলো আক্রমণ করে। একই সঙ্গে তারা এ-সকল গ্রামে বিমান থেকে বোমা হামলা চালায়। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের মানুষজন এ-সময় কেউ দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন, কেউ মাঠে কাজ করছিলেন, কেউ মাঠ থেকে এসে উঠোনে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। হানাদার বাহিনীর অতর্কিত এ বোমা হামলায় কয়েকজন গ্রামবাসী শহীদ হন। ফুলচান বেগম বোমার আঘাতে আহত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায় তিন মাস পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চিত্রী গ্রামে প্রচণ্ড বিমান হামলায় টিকতে না পেরে বাঁচার জন্য মো. আ. হামিদ নদী সাঁতরে তার বোনের শ্বশুর বাড়ি দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামে চলে আসেন। ঘরে ঢোকার সময় ঘরের দরজায় দাড়ানো অবস্থায় তিনি বোমার আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন। গণহত্যায় ৭ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় জানা যায়। তারা হলেন- দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের সালেহা বেগম (২৫) (পিতা গফুর মিয়া), মন্তাজ মিয়া (৮) (পিতা গফুর মিয়া), জোবেদা বেগম (৮) (পিতা আনসার আলী), ফুলচান বেগম (৩০) (স্বামী খালেক মিয়া) ও মো. আ. হামিদ (১২) (পিতা বুধাই মিয়া, চিত্রী)। গণহত্যার পর শহীদদের লাশ আত্মীয়- স্বজনরা বড় কবরস্থানের (কান্দা) গণকবরে সমাহিত করেন। [মো. শাহজাহান সোহেল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড