তুলাতলী বধ্যভূমি ও গণকবর (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম)
তুলাতলী বধ্যভূমি ও গণকবর (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম) চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার অন্তর্গত দোহাজারী ইউনিয়নে অবস্থিত। এখানকার সিএন্ডবি অফিসের স্বল্প দক্ষিণে যে গোডাউনটি রয়েছে, তার আগে একটি তুলাগাছ ছিল। এই তুলাগাছ ও গোডাউনের মধ্যবর্তী স্থানটি তুলাতলী নামে পরিচিত ছিল। এপ্রিলের চতুর্থ সপ্তাহে এখানে পাকবাহিনী ও তাদের দালালদের কর্তৃক বাঙালি নিধনের সূচনা ঘটে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের নানা অঞ্চল থেকে লোকজনদের এখানে ধরে আনা হতো। এখানে U-আকৃতির একটি বিশাল গর্ত খনন করা হয়েছিল। গর্তটির গভীরতা ছিল অনেক। ধরে আনা লোকজনদের ভয়াবহ নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার পর তাদের লাশ গর্তটিতে ফেলে দেয়া হতো। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শতাধিক লোককে ধরে এনে হত্যার পর তাদের লাশ এভাবে গর্তটিতে ফেলা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাকবাহিনীর সঙ্গে জড়িত দালালদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোনাক কোম্পানি (পিতা বদিউর রহমান সওদাগর, কাঠগড়, কালিয়াইশ), এডভোকেট আহমদুর রহমান (পিতা অছিয়র রহমান, হাজিপাড়া, চন্দনাইশ সদর), খায়ের আহমদ চৌধুরী (পিতা রহমত আলী, চৌধুরীপাড়া, পূর্ব চন্দনাইশ), আবু ছৈয়দ (পিতা আবদুল কাদের, কাঠগড়), আহমদুর রহমান (পিতা হাজি আবদুল গণি, দোহাজারী), আমিন শরীফ (পিতা আবদুল হাকিম, পূর্ব দোহাজারী), এয়াকুব মেম্বার (পিতা আবদুল জব্বার, পূর্ব দোহাজারী) প্রমুখ।
তুলাতলীতে লোকজনদের ধরে এনে হত্যার পর তাদের লাশ অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে গর্তটিতে ফেলা সত্ত্বেও এ ঘটনা সিএন্ডবি অফিসের কোনো-কোনো শ্রমিকের নজর এড়ায়নি। এরূপ একজন প্রত্যক্ষদর্শী আলী আকবর (পিতা এয়াকুব আলী, কালিয়াইশ ৭ নং ওয়ার্ড, সাতকানিয়া) বিভিন্ন সময়ে ২৬ জনকে হত্যা করে তাদের লাশ এ গর্তটিতে ফেলতে দেখেছেন। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড