তিতারকুল যুদ্ধ (গাজীপুর সদর)
তিতারকুল যুদ্ধ (গাজীপুর সদর) সংঘটিত হয় ২৯শে মে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এ- যুদ্ধে ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং কয়েকজন রাজাকার ধরা পড়ে।
জয়দেবপুর রাজবাড়ির সামনে দিয়ে সোজা রাস্তায় পূর্বদিকে চিলাই নদীর পশ্চিম তীরে তিতারকুলের অবস্থান। ১৪ই মে পার্শ্ববর্তী হিন্দুপ্রধান বাড়িয়া গ্রামে হানাদার বাহিনী গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজাকারদের ইন্ধনে তারা আরো কয়েকবার এ গ্রামে হামলা চালায়। হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য কমান্ডার মো. আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ কামারিয়া গ্রামে ক্যাম্প স্থাপন করে। নদীর তীরে ১২টি বাংকার খনন করে প্রায় ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এখানে অবস্থান নেন। ২৯শে মে সকাল বেলা ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও কয়েকজন রাজাকার স্থানীয় দালালদের সহায়তায় তিতারকুল আসে। নদী পার হওয়ার জন্য তারা নৌকায় উঠতে গেলে বাংকারে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তাদের সঙ্গে থাকা রাজাকাররা অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। গোলাগুলির শব্দ শুনে আরো পাকিস্তানি সৈন্য ঘটনাস্থলে এলেও মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের ভয়ে তারা নদী পার হবার সাহস না দেখিয়ে ফেরত চলে যায়। তিতারকুলের যুদ্ধে কমান্ডার মো.আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে সেকেন্ড ইন কমান্ড আবদুল মজিদ, মো. শাহজাহান, বাচ্চু মিয়া, মো. আজিম উদ্দিন, সামাদ সরকার, মো. সাদত আলী, মো. চাঁন মিয়া, আবদুর রশিদ, মো. সাহাবুদ্দিন, আমজাদ হোসেন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. ফজলুল হক মোল্লা এবং আবদুল গনি ও তাঁর গ্রুপের আক্তারুজ্জামান সুক্কুর, মো. আলমাছ উদ্দিন, মো. আবদুল কাইয়ুম,, আরজু মিয়া প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড