তারাপুর চা-বাগান গণহত্যা (সিলেট সদর)
তারাপুর চা-বাগান গণহত্যা (সিলেট সদর) সংঘটিত হয় ১৮ই এপ্রিল। পাকসেনারা এক নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। এতে ৩৯ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।
সিলেট-সুনামগঞ্জ রাস্তার পাশে সিলেট শহরে তারাপুর চা- বাগান অবস্থিত। ঘটনার দিন পাকবাহিনী রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে এ চা-বাগানে হামলা চালায়। এতে বাগানের স্বত্বাধিকারী বৈকুণ্ঠ চন্দ্র গুপ্তের পরিবারের পাঁচজন, চিকিৎসক, স্টাফ-সহ বাগানের ৩৯ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। এদিন মারাত্মকভাবে আহত হন বাগানের বর্তমান সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত। তারাপুর চা-বাগান গণহত্যায় নিহতদের স্মৃতি রক্ষার্থে বাগানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধে রবীন্দ্রনাথ গুপ্ত, রাজেন্দ্র লাল গুপ্ত, রজত গুপ্ত, জহর লাল গুপ্ত, রনজিত কুমার গুপ্ত, ক্ষিতীশ চন্দ্র দে, নরেশ দেব, নরেশ চক্রবর্তী, নারায়ণ চক্রবর্তী, নবীরাম চক্রবর্তী, মহেন্দ্ৰ পাল, দুর্গেশ দাশ, মহেন্দ্র কুড়ামুদি, লসমন কুড়ামুদি, পলেশ কুড়ামুদি, হরেন্দ্র কুড়ামুদি, পুরন কুড়ামুদি, মথুরা কুড়ামুদি, মনোরঞ্জন কুড়ামুদি, চুনী কুড়ামুদি, মিটকু কুড়ামুদি, জগন্নাথ কুড়ামুদি, বসই কুড়ামুদি, নিজই কুড়ামুদি, লক্ষীন্দর ঘাটয়ার, লুবিয়া ঘাটয়ার, সিকিন্দর ঘাটয়ার, গপেশ ঘাটয়ার, দুককু ঘাটয়ার, অতুল ঘাটয়ার, সুরেন্দ্র ভূমিজ, দশরথ ভূমিজ, ভরত ভূমিজ, ফটিক হালদার, বরদা হালদার, যজ্ঞেশ্বর হালদার, অমূল্য হালদার, ভারত বল্লব, শ্রীকান্ত ঘাটয়ার, সদানন্দ ঘাটয়ার ও রমা ঘাটয়ার-এর নাম উল্লেখ রয়েছে। এদিন উপেন্দ্র চক্রবর্তী ছেলের বাসা থেকে যাওয়ার পথে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে তারাপুর চা-বাগানে শহীদ হন।
তারাপুর শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। এখানে প্রতিবছর ১৮ই এপ্রিল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিলেটের জেলা প্রশাসক, বাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা অংশ নেন। [মো. মুহিবুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড