জোয়াড়-কাছাড় গণহত্যা (ফেনী সদর)
জোয়াড়-কাছাড় গণহত্যা (ফেনী সদর) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এতে বহু সাধারণ মানুষ নিহত হয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৪শে এপ্রিল ফেনীতে প্রবেশ করেই ফেনী সিও অফিস ও ফেনী পাইলট কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্প থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতো। বিশেষ করে প্রায়ই তারা ধর্মপুর, জোয়াড়- কাছাড়, মটবাড়িয়া, নদুয়া ও মজলিশপুরে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক আওয়ামী লীগ নেতা ও হিন্দুদের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু রমণীদের ধর্ষণ করত।
আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে জোয়াড়-কাছাড়ে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী এক নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় গ্রামে প্রবেশ করে প্রথমে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িতে আক্রমণ চালায়। অনেককে বন্দিশিবিরে নিয়ে যায় এবং অনেককে রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে পেছনে হাত বেঁধে গুলি করে হত্যা করে। তারা রাজাকারদের সহযোগিতায় বহু মানুষকে বেয়নেট চার্জ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেদিনের গণহত্যায় শহীদ ১৯ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন— মমিনুল হক, তরিকুন নেছা, আমিনুল হক, আবুল খায়ের, হোসনে আরা বেগম, মোহছেনা বেগম, হাজেরা খাতুন, সুলতান আহম্মদ, মুসা মিয়া, মকবুল, অহিদুর রহমান, আবদুল গফুর, ওবায়দুল হক, আমিনুল হক, সামছুল হক, আবদুস সালাম, এয়াকুব আলী, আবদুল বারিক ও জুলেখা খাতুন।
মটবাড়িয়া গ্রামের হাবিব উল্যা নামে এক ব্যক্তি পাকবাহিনীর হাত থেকে বাঁচার জন্য নিজ বাড়িতে বাংকার বানিয়ে সপরিবারে আত্মগোপন করেছিল। কিন্তু পাকসেনারা তাদেরও নির্মমভাবে হত্যা করে। পার্শ্ববর্তী ধর্মপুর গ্রামের আহসান নামে এক ব্যক্তিকে মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করার অজুহাতে নির্মমভবে হত্যা করা হয়। [মো. ফখরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড