চৌদ্দগ্রাম গেরিলা বাহিনী (চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা)
চৌদ্দগ্রাম গেরিলা বাহিনী (চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা) পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে গড়ে ওঠা একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী। কাজী আফতাবুল ইসলাম গেদু মিয়াকে আহ্বায়ক এবং সদস্য হিসেবে হাবিবুর রহমান (সুয়াগাজী), ইদ্রিস মাস্টার (বরুড়া), ধীরেন্দ্রনাথ (বিজয়া), আনিসুর রহমান নাজাত (চিওরা) প্রমুখকে নিয়ে গঠিত পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটির প্রধান কেন্দ্র ছিল চিওরা। কমিটির সদস্যদের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ঢাকা থেকে হাতবোমা বানানোর রসদ সরবরাহ করা হয়। পর্যায়ক্রমে সেরু মুন্সী, আমীর হোসেন মনু, আবদুল আজিজ আফিন্দি প্রমুখের বাড়িতে বোমা বানানো এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন আনিসুর রহমান নাজাত, কাজী গোলাম মাওলা, সেরু মুন্সী ও মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া। এ কমিটি চৌদ্দগ্রাম থানা আক্রমণ করে যথেষ্ট পরিমাণ অস্ত্র সংগ্রহ করে। তারপর চিওরা গ্রামে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। এভাবে প্রায় ৩০০-৪০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে কৃষক সমিতি। এপ্রিল মাসে হাতে বানানো বোমা দিয়ে এ বাহিনী একশনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে গেরিলা বাহিনী কয়েকটি সামরিক একশনে অবতীর্ণ হয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হাসানপুর রেল স্টেশনের কাছে পরিকোট ব্রিজ উড়িয়ে দেয়া। গেরিলা বাহিনীর রাজনৈতিক নেতৃত্বে ছিলেন গেদু মিয়া ও হাবিবুর রহমান। এর সামরিক কমান্ডার ছিলেন আনিসুর রহমান নাজাত, মফিজউদ্দিন (সাবেক মুজাহিদ কমান্ডার, বাতিসা), সামসুল আলম খোকন ও শেয়ারউল্লা (চিওরা)। সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ, বীর উত্তম-এর সহায়তায় গোটা বাহিনীকে ত্রিপুরার নির্ভয়পুরে আনা হয় এবং প্রায় ৪ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাকে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। আনিসুর রহমান নাজাত এ বাহিনীর কমান্ডার নিযুক্ত হন। [মোতাহার হোসেন মাহবুব]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড