চেঁচুড়ি গণহত্যা (ডুমুরিয়া, খুলনা)
চেঁচুড়ি গণহত্যা (ডুমুরিয়া, খুলনা) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসে। এতে কয়েকজন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
চেঁচুড়ি গ্রামটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার ধামালিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ এলাকায় রাজাকারদের সক্রিয় তৎপরতা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও মজিদ বাহিনীর সদস্য সন্দেহে এরা বিভিন্ন স্থান থেকে যুবকদের ধরে এনে হত্যা ও নির্যাতন করত। আগস্ট মাসে চেঁচুড়ি গ্রামের মোকছেদ গোলদার নামে একজন তরুণকে তারা সকালে ধরে আনে। প্রথমে তাকে নির্মমভাবে প্রহার করে। এরপর বেলা ১টার দিকে তারা তাকে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। গুলিবিদ্ধ ও মারাত্মকভাবে আহত হওয়া সত্ত্বেও মোকছেদ জীবিত ছিল। কিন্তু রাজাকারদের ভয়ে কেউ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারেনি। অব্যাহত রক্তক্ষরণে বেলা ৩টার দিকে সে মারা যায়। ঘরে তখন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।
এর কিছুদিন পরে স্থানীয় নেহালপুর ক্যাম্পের রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে আসে। তারা কপালিয়া বাজারে এলে মজিদ বাহিনীর কিছু যোদ্ধা তাদের প্রতিরোধ করার জন্য গুলি চালান। এটি ছিল একটি গেরিলা আক্রমণ। কিছুক্ষণ গুলি করে তাঁরা স্থান ত্যাগ করেন। এ-সময় পাকিস্তানি সেনারা আশপাশের গ্রামগুলোতে তল্লাশি শুরু করে। তারা চেঁচুড়ি গ্রামে ঢুকলে তাদের দেখে দুই ব্যক্তি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পাকিস্তানি হানাদাররা তখন তাদের ওপর গুলি চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে এদিন কয়েকজন প্রাণ হারান। এ গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে চেঁচুড়ি গ্রামের ৪ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মোকছেদ গোলদার (পিতা সামুদ্দি গোলদার), সাধু, আবদুল মতিন এবং প্রফুল্ল রায়। [দিব্যদুতি সরকার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড