মুক্তিযুদ্ধে চিরিরবন্দর উপজেলা (দিনাজপুর)
চিরিরবন্দর উপজেলা (দিনাজপুর) দিনাজপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এর পূর্বে পার্বতীপুর, পশ্চিমে দিনাজপুর সদর ও উত্তরে খানসামা উপজেলা এবং দক্ষিণে ভারত ৷ চিরিরবন্দর থেকে রেলপথে একদিকে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় এবং অন্যদিকে পার্বতীপুর হয়ে রংপুর, গাইবান্ধা, রাজশাহী ও খুলনায় যাতায়াত করা যায়। মুক্তিযুদ্ধকালে সড়কপথের পরিবর্তে রেলপথেই যাতায়াত সহজ ছিল। সড়কপথে চিরিরবন্দরের আমতলী থেকে ফুলবাড়ী ও দিনাজপুর এবং রানীরবন্দর থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর, দিনাজপুরের কাহারোল, বীরগঞ্জ ও দিনাজপুর সদরে যাতায়াত করা যেত।
চিরিরবন্দরের মানুষ ৫২-র ভাষা-আন্দোলন- ও ৬৬-র ছয়দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। চিরিরবন্দরে মুক্তিসংগ্রামের প্রধান সংগঠক ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ- প্রধান নেতা শাহ মাহতাব আহমেদ (সাতনালা)।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে চিরিরবন্দর এলাকা থেকে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর সমর্থনে ঐ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রানীরবন্দর, আমবাড়ি ও মোহনপুরে জনসভা করেন। তখন নিয়মিত জনসভা ও মিছিলের মাধ্যমে চিরিরবন্দরের মানুষকে বাঙালির মুক্তি সনদ ছয়দফা দাবিতে জাগিয়ে তোলা হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর শাহ মাহতাব আহমদ এমএনএ-কে আহ্বায়ক করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আওয়ামী লীগের বিপিন বিহারী রায়, আফতাবউদ্দিন শাহ, আইয়ুবুর রহমান শাহ, মোশাররফ হোসেন সরকার, মোতালেব সরকার (বাসুদেবপুর), ইয়াকুব কমান্ডার (আনসার কমান্ডার), আব্দুস সালাম (বাসুদেবপুর), নিয়ামত আলী শাহ (রানীরবন্দর), আবু হোসেন শাহ (আব্দুলপুর), মোতালেব সরকার, কমিউনিস্ট পার্টির আবুবকর সিদ্দিক, বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের মিজানুর রহমান মানু (স্বাধীনতা- পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগে যোগদান ও পরে জাতীয় সংসদের হুইপ), নন্দীবাবু (গছাহার-রানীরবন্দর), ছাত্রলীগের মাহতাবউদ্দিন সরকার (সরকারপাড়া), আব্দুর রহিম শাহ (আব্দুলপুর), এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী, জাকারিয়া জাকা (স্বাধীনতার পর দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক) প্রমুখ সংগ্রাম কমিটির সদস্য ছিলেন। সংগ্রাম কমিটিতে আরো সক্রিয় ছিলেন মাহতাব বেগ (ইউপি চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর দিনাজপুরের প্রথম শহীদ), অখিলউদ্দিন শাহ (কালগঞ্জ), তসিরউদ্দিন সরকার (বাসুদেবপুর), মকবুল হোসেন (রানীরবন্দর), আনোয়ার হোসেন (খতেজানপুর), মকবুল হোসেন (নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান), রশিদ বেগ, আব্দুস সাত্তার মাস্টার, আজমল হোসেন (রানীরবন্দর), নিয়ামত শাহ (রানীরবন্দর), কবি লুৎফর রহমান (রানীরবন্দর), ইব্রাহিম মেম্বার (রানীপুর), মজিরউদ্দিন কমান্ডার (রানীপুর), আজিজুল হক শাহ (পরে সাতনালা ইউপি চেয়ারম্যান), আব্দুল হাই (সাতনালা), শাহ খোদা বক্স ওরফে কবি (হাসিমপুর), শামসুল হক ওরফে কালথা শাহ (চম্পাতলী), ছমির পাটোয়ারী (সাতনালা), জামালউদ্দিন শাহ (সাতনালা) প্রমুখ। সংগ্রাম কমিটি গঠনের মাধ্যমে এখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়। এ কমিটি মিছিল, সভা ও সমাবেশের মাধ্যমে মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তোলে। এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
চিরিরবন্দর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন এস এম গোলাম মোস্তফা, আব্দুল মজিদ বেগ, মো. ফয়জউদ্দিন, ফয়জার রহমান, নজরুল ইসলাম, সাবুল্লাহ মাস্টার (খোচনা), আজিজার রহমান (৪নং ইসবপুর), আফজাল হোসেন (১২নং আলোকডিহি) এবং আব্দুর রহমান (রামনগর, সাবুল্লাহ মাস্টারের সহকারী কমান্ডার)।
এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ কোনো স্থানীয় বাহিনী ছিল না। এখানে মুজিব বাহিনী- তৎপর ছিল। এ বাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী এবং সহ-অধিনায়ক তসলিমউদ্দিন সরকার।
চম্পাতলী, রানীরবন্দর, ভূষিরবন্দর, মন্মথপুর, মোহনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে জনতার প্রতিরোধযুদ্ধ হয়। চিরিরবন্দরের মাহতাব বেগ হাজার-হাজার জনতাকে নিয়ে পাকসেনা ও বিহারিদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে ২৪শে মার্চ সৈয়দপুরে শহীদ হন। চম্পাতলী, ভূষিরবন্দর ও রানীরবন্দর দিয়ে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আব্দুলপুর ইউনিয়নের বানীযুগী মহল্লায় রেললাইনের ১২নং ব্রিজ ভেঙ্গে পাকবাহিনীর অগ্রযাত্রায় বাধা দেয়া হয়। মোহনপুর ও আমতলীতেও বাধার সৃষ্টি করা হয়।
পাকবাহিনী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনদিক দিয়ে চিরিরবন্দরের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশ করে। একটি দল নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে চিরিরবন্দরের চম্পাতলী হয়ে রানীরবন্দরে আসে। এরপর আরো অগ্রসর হয়ে ভূষিরবন্দর ডাকবাংলোয় ক্যাম্প স্থাপন করে। দ্বিতীয় দল পার্বতীপুর থেকে রেলপথে মন্মথপুর হয়ে চিরিরবন্দরে অনুপ্রবেশ করে এবং চিরিরবন্দর রেলস্টেশনের নিকটবর্তী থানা, রেলপথের কাঁকড়া সেতু ও ১২নং সেতুর পাশে ক্যাম্প স্থাপন করে। তৃতীয় দল ফুলবাড়ী থেকে রাঙামাটি, আমবাড়ি ও আমতলী দিয়ে মোহনপুর সেতুর দিকে অগ্রসর হয়ে সেতুর চিরিরবন্দরের অংশে ক্যাম্প স্থাপন করে।
চিরিরবন্দরে স্বাধীনতাবিরোধী শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠন করে। শান্তি কমিটির প্রধান ব্যক্তিরা ছিল খড়িকাটা খাইরুল ইসলাম (হাটখোলা) ও তার পিতা ধোলন, ৩নং ফতেজানপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান শফিরউদ্দিন (চক গোবিন্দপুর), ভেন্ডা মোহাম্মদ (আলোকডিহি ইউপির বেকিপুল), ৪নং ইসবপুর ইউনিয়নাধীন দক্ষিণনগরের ফরিদ সর্দার, বন্দে আলী, মোহাম্মদ আলী, ইদ্রিস আলী, দগরবাড়ির নুরুল ইসলাম, জোতরাম-ধনপুরের আফাজউদ্দিন, কর্মকারপাড়ার ভন্ডা, আছিরউদ্দিন, আজিমউদ্দিন, নওখৈর বকুল-শাহপাড়ার ডা. গোলজার, সখিপুর হাটের খুতু, বাংলাবাজারের কামরুল ইসলাম ও খোকা ফকির, খয়জাপুরের জমিরউদ্দিন, ডা. তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
চিরিরবন্দর সংলগ্ন রেলওয়ে শহর সৈয়দপুর ছিল বিহারি অধ্যুষিত। সেখানে সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্ট ছিল। বিহারি ও পাকসেনারা সৈয়দপুর শহরে বাঙালিদের অবরুদ্ধ করে রেখে তাদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে এমন খবর পেয়ে সাতনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংগ্রাম কমিটির নেতা মাহতাব বেগ কয়েক হাজার জনতাকে নিয়ে ২৪শে মার্চ সৈয়দপুরে হামলা চালানোর জন্য অগ্রসর হন। তাঁর সঙ্গে ছিল রানীরবন্দর, চম্পাতলী, ভূষিরবন্দরসহ সাতনালা ও কামারপাড়া এলাকার বিপুল সংখ্যক তাঁতকর্মী, আদিবাসী ও সাধারণ জনতা। তারা তীর- ধনুক, বল্লম, হাঁসুয়া, কোদাল, লাঠিসোঁটা ইত্যাদি নিয়ে বিহারি ও পাকসেনাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে। কিন্তু পাকসেনাদের কামানের তোপে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। সে-সময় মাহতাব বেগ বিহারিদের হাতে ধরা পড়েন এবং বিহারিরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুর জেলার প্রথম শহীদ।
১৪ই এপ্রিল পাকবাহিনী আব্দুলপু ইউনিয়নের অধিকারীপাড়া থেকে ভুবনেশ্বর অধিকারী নামে একজনকে বানীযুগী বধ্যভূমিতে নিয়ে তার শরীর ছয় টুকরো করে কাটে। বাঙালিদের ছয়দফা দাবিকে ব্যঙ্গ করার জন্যই এটা করা হয় এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের পর থেকে চিরিরবন্দরের মানুষ প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করে।
১৮ই এপ্রিল পাকবাহিনী ও রাজাকাররা বানীযুগী গণহত্যা- চালায়। এতে ৩৬ জন সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হয়। কাঁকড়া নদীর রেলসেতুর দক্ষিণ পাশে একটি বধ্যভূমি আছে, যা কাঁকড়া রেলসেতু বধ্যভূমি- নামে পরিচিত। এখানে দিনের পর দিন বহু লোককে ধরে এনে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের দিয়ে গর্ত খুঁড়িয়ে সে-গর্তেই তাদের কবর দেয়া হয়। নারীদের হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়।
পাকবাহিনী যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে চম্পাতলী, নওখৈর, দেবীডবা, বেলাইচণ্ডী, হরিরামপুর প্রভৃতি গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও বহু লোককে হত্যা করে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে কামারপাড়া, দক্ষিণ নওখৈর, খোচনা, পশ্চিম সাইতাড়া, দগোরবাড়ি বড়পাড়া এবং আস্করপুর ইউনিয়নের শাহালপুর গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও হত্যাকাণ্ড চালায়। প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মো. গোলাম রহমান (খানসামা)-এর ছোটভাই মাহতাব আরেফিনকে চিরিরবন্দরে হত্যা করা হয়। ৭ই অক্টোবর বিন্যাকুড়ি, কামারপাড়া, দক্ষিণ আলোকডিহিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা প্রায় ২০০ বাঙালিকে আলোকডিহি জে বি স্কুল প্রাঙ্গণে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা আলোকডিহি জে বি স্কুল গণহত্যা – নামে পরিচিত। একই দিন পাকসেনা ও রাজকাররা কামারপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় অগ্নিসংযোগ করে এবং ডা. কালিদাসের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া ১৫-২০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এ ঘটনা কামারপাড়া গণহত্যা- নামে পরিচিত।
চিরিরবন্দর উপজেলায় চারটি জায়গায় পাকবাহিনীর কাম্প ছিল— চিরিরবন্দর থানা, কাঁকড়া রেলসেতুর পাশে, আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং ভূষিরবন্দর সেতুর পশ্চিম পাশে। রাজাকারদের ক্যাম্প ছিল নান্দেরাইল, সখিপুরহাট ও ভূষিরবন্দরে। এগুলো বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
চিরিরবন্দর উপজেলায় সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি বানীযুগী মাঠ বধ্যভূমি। এখানে পাকবাহিনী, বিহারি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে বাঙালিদের ধরে এনে জবাই করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে এবং গুলি চালিয়ে হত্যা করত। কাঁকড়া নদীর ওপর রেলসেতুর নিচে, তেলিপুকুরে, আলোকডিহি জে বি উচ্চ বিদ্যালয়েও অনেককে হত্যা করা হয়।
চিরিরবন্দরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দগরবাড়ি, ফকিরপাড়া, আলোকডিহি ও চিরিরবন্দর থানা এলাকায় বড় ধরনের যুদ্ধ হয়। দগরবাড়ির সম্মুখ যুদ্ধে ইউসুফ আলী নামে একজন বাঙালি শহীদ হন। ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে চিরিরবন্দর থানা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ৫ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৪ জন সদস্য শহীদ হন। অপরদিকে পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয় এবং এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়। ১৫ই ডিসেম্বর চিরিরবন্দর উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
চিরিরবন্দর উপজেলার ২১ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন— গোলাম মোস্তফা (পিতা মোজাম্মেল ইসলাম, উত্তর পলাশবাড়ি), মোজাফফর আলী (পিতা আমির আলী, নওখৈর), জহর আলী (পিতা আমজাদ আলী, দক্ষিণ সুখদেবপুর), ফজলুর রহমান (পিতা আব্দুর রহমান, নান্দেরাই), ওসমান গণি (পিতা শুকুর আলী, জয়দেবপুর), আব্দুল আজিজ (পিতা তাহের মাসুদ, বড় হাসিমপুর), জবান আলী (পিতা খোশ মোহাম্মদ, খোচনা), মোতালেব হোসেন (পিতা জাহান বক্স, বানিয়াগাড়ি), গোলাম মোস্তফা (পিতা মফিজউদ্দিন, তাজপুর), আবুল ফজল (পিতা ফকির মোল্লা, চকমুসা), আফছার আলী (পিতা আজিমউদ্দিন, হরিহরপুর), আব্দুল জলিল (পিতা জবেদ আলী, কৃষ্ণচন্দ্রপুর), সাইদুর রহমান (পিতা ওকিউদ্দিন শাহ, কালিগঞ্জ), ইলিয়াজউদ্দিন (পিতা জাকিরউদ্দিন সরকার, বাসুদেবপুর), নেছারউদ্দিন (পিতা এছারউদ্দিন, মথুরাপুর), নাছিরউদ্দিন (পিতা ওমেদ আলী, আন্ধারমুহা), নজিবর রহমান (পিতা উরমান শাহ, রাজাপুর), আব্দুল সোবহান (পিতা আমিরউদ্দিন, বাসুদেবপুর), জালালউদ্দীন (পিতা মোবারক আলী, তাজপুর), মো. ইব্রাহীম (পিতা এম আর চেতা মোহাম্মদ, হযরতপুর) এবং মাহতাব বেগ (পিতা আব্দুল হামিদ বেগ, গছাহার)।
চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ২০১৫ সালের ১৬ই ডিসেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামযুক্ত একটি স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়। বিন্যাকুড়ি এলাকায় প্রায় ১৫ বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জোতরাম ধনগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তান আমলে ৮নং সাইতাড়া ইউনিয়নের একটি বাজারের নাম ছিল পাকিস্তান বাজার মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্থানীয় জনগণ এর নাম পরিবর্তন করে রাখে বাংলা বাজার। তারপর থেকে বাজারটি এ নামেই পরিচিত। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড