চরম্বা শান্তি কমিটির হেডকোয়ার্টার্স অপারেশন (লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম)
চরম্বা শান্তি কমিটির হেডকোয়ার্টার্স অপারেশন (লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় সেপ্টেম্বর মাসে। এতে ৫ জন রাজাকার – নিহত হয়, স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দি হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা হেডকোয়ার্টার্স থেকে ১৯টি থ্রি- নট-থ্রি রাইফেল উদ্ধার করেন।
চরম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ একই ইউনিয়নের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল। তার বাড়িটি শান্তি কমিটির হেডকোয়ার্টার্স হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তার নেতৃত্বে এই হেডকোয়ার্টার্সে ৩০ জন রাজাকারের অবস্থান ছিল। এ রাজাকাররা চরম্বা ইউনিয়নের স্বাধীনতাকামী জনগণের ঘরে- ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নারীনির্যাতন করত। এ অবস্থায় সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার আছহাব মিয়ার নেতৃত্বে ৪২ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল চরম্বা ইউনিয়নে অবস্থিত শান্তি কমিটির হেডকোয়ার্টার্স আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য তাঁরা চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি থেকে রওনা দিয়ে গভীর রাতে চরম্বা পৌঁছান এবং রাতেই অপারেশনটি পরিচালনা করেন। রাজাকাররা নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থায় ছিল। সুলতান আহমদের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চালায়। উভয় বাহিনীর মধ্যে দুঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ চলে। এতে ৫ জন রাজাকার নিহত হয়, শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দি হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা হেডকোয়ার্টার্স থেকে ১৯টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল উদ্ধার করেন।
এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধাগণ হচ্ছেন- কমান্ডার হাবিলদার আছহাব মিয়া (পিতা কেরামত আলী, উত্তর গাছবাড়িয়া, চন্দনাইশ), আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইসহাক, উত্তর হাশিমপুর, চন্দনাইশ), আবদুল গফুর (পিতা আবদুর রহমান, খরনা, পটিয়া), লাঠি আলম (পটিয়া), নায়েক ফয়েজ আহমদ (উত্তর কাঞ্চনা, সাতকানিয়া), নায়েক সুজায়েত আলী (পিতা মফজল আহমদ, সাতবাড়িয়া, চন্দনাইশ), ছাবের আহমদ (পিতা গুরা মিয়া, দোহাজারী), হাবিলদার রফিক (ছমদর পাড়া, সাতকানিয়া), ল্যান্স নায়েক নূরুল কবির (সাতকানিয়া), হারুন (দোহাজারী), পুলিশ সদস্য সুভাষ বড়ুয়া, মেকানিক নুরুশ্ছফা (সাতকানিয়া), আহমেদ শফি (সাতকানিয়া), আতিউর রহমান প্রমুখ। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড