চন্দ্রা যুদ্ধ (কালিয়াকৈর, গাজীপুর)
চন্দ্রা যুদ্ধ (কালিয়াকৈর, গাজীপুর) সংঘটিত হয় ৪ঠা নভেম্বর। এতে ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের ২টি রাইফেল হস্তগত করেন এবং তাদের একটি তেলের ট্যাংকারে আগুন ধরিয়ে দেন।
বর্তমান চন্দ্রা বাস স্টেশন থেকে কিছুটা পূর্বদিকে বন বিভাগের গেস্ট হাউস ও চন্দ্রা বন বিট অফিস। মাঝখানে ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক। সড়কের দুধারে ঘন সবুজ গজারি বন ও ঝোপঝাড়। আশপাশের এলাকায় তেমন কোনো বাড়িঘর ছিল না। বিকেলের দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে দু-একটি গাড়ি চলাচল করলেও লোকজনের যাতায়াত ছিল না। আফছার উদ্দীন বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হাকিম তাঁর সহকারী কমান্ডার সুবেদার (অব.) মো. সিদ্দিক হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন পাকসেনাদের গাড়ি যেন নির্বিঘ্নে এ পথে চলাচল করতে না পারে। নির্দেশ অনুযায়ী সিদ্দিক হোসেন এ এলাকা সম্বন্ধে ধারণা আছে এমন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে প্রায়শই খাড়াজোড়া, ডাইনকিনী মোড় ও চন্দ্রা বিট অফিস সংলগ্ন সুবিধামতো স্থানে পাকসেনাদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে এম্বুশ করতেন। নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে তিনি ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে চন্দ্রা বিট অফিস সংলগ্ন খাদে এম্বুশ করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি লক্ষ করেন, পাকসেনাদের একটি তেলের ট্যাংকার সড়ক দিয়ে এগিয়ে আসছে। সিদ্দিক হোসেনের নির্দেশ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ট্যাংকার লক্ষ করে গুলি ছুড়তে আরম্ভ করেন। গুলিতে ট্যাংকার ছিদ্র হয়ে রাস্তায় তেল ছড়িয়ে পড়ে। গাড়ির ড্রাইভার ও অপর দুজন পাকসেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। গাড়ি থেকে ২টি রাইফেল উদ্ধার করে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসেন। এ-যুদ্ধে মিজানুর রহমান, সুরেশ, আহিদ দেওয়ান, আকতারুজ্জামান, ছামান উদ্দীন প্রমুখ অংশ নেন। [মো. মোয়াজ্জেম হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড