চট্টগ্রাম সেনানিবাস নির্যাতনকেন্দ্র (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রাম সেনানিবাস নির্যাতনকেন্দ্র (চট্টগ্রাম) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অন্যতম প্রধান নির্যাতনকেন্দ্ৰ। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইউনিটের তত্ত্বাবধানে এখানে বাঙালিদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এর অভ্যন্তরে একাধিক নির্যাতন কক্ষ ছিল। এখানে ধরে এনে নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয় চট্টগ্রামের এসপি শামসুল হক, চট্টগ্রাম দুর্নীতি দমন বিভাগের ডেপুটি ডাইরেক্টর নাজমুল হক, দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের আর আই আকরাম হোসেন, কোতয়ালি থানার ওসি আবদুল খালেকসহ স্বাধীনতাকামী অসংখ্য মানুষকে।
সেনানিবাসে নির্যাতনকেন্দ্রের পাশেই একটি কক্ষ ছিল। সেখানে বাঙালি নারীদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। মাসের পর মাস বহু বাঙালি নারী পাকসেনাদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। নির্যাতনের শিকার বহু নারী গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। হানাদার বাহিনী যাদের ব্যবহারের অযোগ্য মনে করত, তাদের নিকটস্থ পাহাড়ের আড়ালে নিয়ে গুলি করে হত্যা করত। ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে সেনানিবাস থেকে ১৬১ জন নারী ও ২৮৭ জন পুরুষকে আহত ও বিধ্বস্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৪৩ জন নারীও ছিলেন। চট্টগ্রাম সেনানিবাসে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড