ঘোষপাড়া গণহত্যা (আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ)
ঘোষপাড়া গণহত্যা (আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৫ই আগস্ট। এতে ৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ এবং ৭ জন আহত হন।
ঘটনার দিন পাকিস্তানি বাহিনী জলসুখা ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের ঘোষপাড়ায় এক নির্মম গণহত্যা সংঘটিত করে। সেদিন একদল হানাদার সেনা সিরাজ মিয়া, আলী রেজা, আ. করিম ও আ. মালেক নামে এ দেশীয় কয়েকজন সহযোগী নিয়ে স্পিড বোটে করে দুর্লভপুর গ্রামে এসে বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড চালায়।
পাকসেনারা গ্রামে প্রবেশ করে ঘোষপাড়ায় ১৬ জন গ্রামবাসীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। গুলির আঘাতে কারো পা, কারো হাত দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কেউ বুকে, কেউ মাথায়, কেউ-কেউ হাতে-পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। কারো কারো গুলিবিদ্ধ নিথর দেহ এখানে-সেখানে পড়ে থাকে। সেদিন রমেশ গোপ (পিতা নদীয়া চান্দ গোপ), হরিধন গোপ (পিতা নদীয়া চান্দ গোপ), বিনোদ গোপ (পিতা বিপীন চন্দ্র গোপ), রসময় গোপ (পিতা রসিক চান গোপ), সুখময় গোপ (পিতা হরেকৃষ্ণ গোপ), ধনু গোপ (পিতা রসিক চান গোপ), মহানন্দ গোপ (পিতা মথুর চন্দ্র গোপ), দ্বিজেন গোপ (পিতা বৈকুণ্ঠ গোপ) ও যতীন্দ্র হালদার (শংক মহল নিবাসী জনৈক সাধু পুরুষ) এই ৯ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। অশ্বিনী গোপ (পিতা হরেকৃষ্ণ গোপ), পতাকী আচার্য (পিতা রমেশ আচার্য), ব্রজলাল গোষ, মদন ঘোষ, নরেন্দ্র গোপ, মোদক গোপ ও রসময় গোপ – এই ৭ জন আহত অবস্থায় বেঁচে যান। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড