ঘটকচর হাইস্কুল রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (মাদারীপুর সদর)
ঘটকচর হাইস্কুল রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (মাদারীপুর সদর) পরিচালিত হয় ১লা নভেম্বর। এতে ১০-১২ জন রাজাকার নিহত ও ৭-৮ জন আটক হয়। বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কে মস্তফাপুর ট্রাফিক মোড় থেকে ফরিদপুরের দিকে মাত্র এক কিলোমিটার সামনে অগ্রসর হলে ঘটকচর বাজার। বাজারের পশ্চিম পাশে একটি খাল ও পূর্ব পাশে ঘটকচর হাইস্কুল। এ হাইস্কুলে অক্টোবর মাসে রাজাকাররা একটি ক্যাম্প স্থাপন করে। এর পূর্বে এ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের উপর্যুপরি গেরিলা আক্রমণে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার- আলবদররা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারা তখন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারতেন। পেয়ারপুর-মিঠাপুর- হাজরাপুর এলাকায় যেতে হলে ঘটকচর বাজারের পাশের খাল দিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু ঘটকচর হাইস্কুলে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবাধ চলাচল বিঘ্নিত হয়। সুতরাং ঘটকচর বাজারের পাশের খালটি শত্রুমুক্ত ও নিরাপদ রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খুবই জরুরি হয়ে পড়ে। এজন্য তাঁরা ঘটকচর রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১লা নভেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ পরিচালনা করেন। তাঁরা ক্যাম্প ঘেরাও করে রাজাকারদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। কিন্তু অবরুদ্ধ রাজাকাররা আত্মসমর্পণ না করে গুলি চালাতে শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ করেন। তাঁরা এনারগা ব্যবহার করে স্কুল ভবনের এক পাশের দশ ইঞ্চি পুরু দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্রাশ ফায়ারে ১০-১২ জন রাজাকার নিহত হয় এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৭-৮ জন আটক হয়। আটককৃতদের পরদিন ভোরে খলিল বাহিনী-র কলাগাছিয়া ক্যাম্পে নেয়া হয়। পরে তাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ও তা কার্যকর করা হয়। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড