ঘাসিরদিয়া গণহত্যা (শিবপুর, নরসিংদী)
ঘাসিরদিয়া গণহত্যা (শিবপুর, নরসিংদী) সংঘটিত হয় ২২শে অক্টোবর। এতে ১৭ জন গ্রামবাসী নির্মম হত্যার শিকার হয়।
নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার উত্তরে মনোহরদী, দক্ষিণে নরসিংদী সদর, রায়পুর ও পলাশ, পূর্বে রায়পুরা ও বেলাব এবং পশ্চিমে পলাশ উপজেলা। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আসাদের বাড়ি শিবপুরে হওয়ায় তাঁর রক্তের প্রতিশোধ নিতে শিবপুর অঞ্চলের মানুষ তখন থেকেই স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হতে থাকে। আর শিবপুর উপজেলার একটি গ্রাম ঘাসিরদিয়া। এ গ্রামটি নরসিংদী ও শিবপুরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী জেলা বোর্ডের রাস্তার পাশে অবস্থিত। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ রাস্তায় প্রায়ই নরসিংদী থেকে পুটিয়া হয়ে শিবপুরে যাতায়াত করত। পাকবাহিনীর যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধা মজনু মৃধার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ ২১শে অক্টোবর রাতে ঘাসিরদিয়া গ্রামের ঐ রাস্তায় এন্টিট্যাংক মাইন পুঁতে রাখে। ২২শে অক্টোবর সকালে হানাদার বাহিনীর একটি গ্রুপ কয়েকটি জিপযোগে নরসিংদী থেকে পুটিয়ার দিকে অগ্রসর হলে পুঁতে রাখা মাইনের ওপর আসামাত্রই মাইন বিস্ফোরিত হয়। এতে পাকবাহিনীর অগ্রগামী দলের একটি জিপ ধ্বংস এবং বেশ কয়েকজন সৈন্য হতাহত হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাকি সৈন্যরা ঘাসিরদিয়া গ্রামে প্রবেশ করে নারী-পুরুষসহ ১৭ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এদিনের গণহত্যার শিকার শহীদরা হলেন- আফতাব উদ্দিন (পিতা বুসাই), মো. শামসুল হক (পিতা আফতাব উদ্দিন), বানেছা খাতুন (স্বামী আফতাব উদ্দিন), গোলাপী খাতুন (স্বামী মো. শামসুল হক), আবদুর রশিদ (পিতা নূরু মিয়া), আবদুল গফুর (পিতা নূরু মিয়া), গয়েছ আলী (পিতা আশ্রাব আলী), সোনার বাপ (পিতা মজম সরকার), আকাব্বর আলী (পিতা ফেলান), মানিক ভূঁইয়া (পিতা গুলজার ভূঁইয়া), ফজলু (পিতা জুবেদ আলী), হাসিম (পিতা দরবেশ আলী), মো. রফি মিয়া (পিতা আবদুর রইছ), ফুলমতি (পিতা আদম আলী), হানিছ, ফজর আলী ও আলাউদ্দিন। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড