গুণগ্রাম যুদ্ধ (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল)
গুণগ্রাম যুদ্ধ (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ১০ই ডিসেম্বর। এতে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। অপরদিকে দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং ৫ জন আহত হন।
কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার এন এ খান আজাদ কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ঘাটাইলের তারাগঞ্জ বাজারে অবস্থান করছিলেন। ১০ই ডিসেম্বর গোপন সূত্রে তাঁর কাছে সংবাদ আসে যে, একজন পাকসেনা বাইসাইকেলে করে যানবাহন খুঁজতে মধুপুর থেকে মূল সড়কপথে টাঙ্গাইলের দিকে আসছে। এ সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে ঘাটাইলের গুণগ্রাম নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেন এবং বাইসাইকেল আরোহী ঐ পাকসেনাকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। ধৃত পাকসেনার নিকট থেকে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন তাদের (হানাদারদের) একটি গ্রুপ টাঙ্গাইল ক্যাম্পে ফিরবে। তারা পায়ে হেঁটে এগিয়ে আসছে। প্রায় ৫ কিলোমিটারের মতো পেছনে আছে। এ কথা শুনে কমান্ডার এন এ খান আজাদ তাঁর প্লাটুন কমান্ডার মাসুদুল হক মাসুদকে নির্দেশ দেন ১০ জন চৌকস মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে অগ্রসরমাণ ঐ হানাদার সেনা গ্রুপের গতিরোধ করে সুযোগ বুঝে আক্রমণ করার। মাসুদুল হক মাসুদ কমান্ডারের নির্দেশ মোতাবেক ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে যথাস্থানে অবস্থান নেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন জহুরুল হক চান মিঞা কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধা। বিকেল ৩টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা গুণগ্রামে হানাদারদের গতিরোধ করেন। উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ৫ জন পাকসেনা মারা যায় এবং ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আবদুল আজিজ (মেলান্দহ, জামালপুর) এবং আনোয়ার হোসেন (ব্রাহ্মণশাসন, ঘাটাইল) শহীদ হন। এ-যুদ্ধে বাগবাড়ির মহিউদ্দিন, সরিষাবাড়ির আজাহার আলীসহ পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। [শফিউদ্দিন তালুকদার
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড