You dont have javascript enabled! Please enable it! কুসুমদী-সেনেরডাঙ্গা গণহত্যা(আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

কুসুমদী-সেনেরডাঙ্গা গণহত্যা(আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর)

কুসুমদী-সেনেরডাঙ্গা গণহত্যা(আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর) সংঘটিত হয় মে মাসে আলফাডাঙ্গা গণহত্যার পরপর। কুসুমদী ও সেনেরডাঙ্গা দুটি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম। এদুটি গ্রামে হানাদাররা হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এবং তাদের দোসর রাজাকারদের সহযোগিতায় মানুষের ঘরবাড়ি লুটপাট করে। ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায় ১১ই মে সংঘটিত আলফাডাঙ্গা গণহত্যার পর রাজাকার কমান্ডার নাসির মৌলভীর সহায়তায় পাকবাহিনী কুসুমদী ও সেনেরডাঙ্গা গ্রামে হানা দেয়। গ্রাম দুটি হিন্দু অধ্যুষিত এবং আলফাডাঙ্গায় যখন হত্যাকাণ্ড চলছিল, তখন সেখান থেকে অনেকে পালিয়ে এ গ্রাম দুটিতে আশ্রয় নিয়েছিল। নারী- শিশু-সহ অনেকে জঙ্গল ও গর্তের মধ্যে আশ্রয় নেয়। পাকসেনারা এসব মানুষের ওপর বেপরোয়া গুলি চালালে অনেকে প্রাণ হারান। পরে পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকাররা লুটপাট শেষে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। কুসুমদী-সেনেরডাঙ্গা গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে ১৯ জনের নাম জানা যায়। তাঁরা হলেন- কুসুমদীর পঞ্চানন বাকচি (পিতা নগেন্দ্রনাথ বাকচি), সুকুমার শিকদার (পিতা অভিলাষ শিকদার), নকুল মণ্ডল (পিতা ক্ষুদিরাম মণ্ডল), নগেন মণ্ডল, দেবেন বৈদ্য, মণীন্দ্র মণ্ডল (পিতা দয়ারাম মণ্ডল), যতীন শীল, গোসাই বালা (পিতা স্মৃতিধর বালা), নিখিল মণ্ডল (পিতা মনোরঞ্জন মণ্ডল), স্নেহলতা (স্বামী গোকুল চন্দ্র), সুরেশ মণ্ডল, অনিল মণ্ডল, শ্রীমতী (গ্রাম ঘিদাহ), ভবো, শুকুরহাটার অধীর ও মুকুন্দ। সেদিন অনেকে আহত হন। হতাহতদের সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং পেশায় কৃষিজীবী ও কাঠমিস্ত্রি। পাকসেনারা তাড়া করলে শ্রীমতী, অধীর ও মুকুন্দ অদূরের গ্রাম ইছামতির একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। আশ্রয়দাতা হাসা মিয়ার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। সেনেরডাঙ্গার জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে যাদের হত্যা করা হয়, তাদের বেশির ভাগই বাইরের লোক। তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা যায়নি। [আবু সাঈদ খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড