কুলাঘাট যুদ্ধ (ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম)
কুলাঘাট যুদ্ধ (ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম) সংঘটিত হয় ১১ই আগস্ট। পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘটিত এ- যুদ্ধে ১২ জন পাকসেনা নিহত ও একজন ধৃত হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যায় ৷
কুলাঘাট ১৯৭১ সালে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। এখানে একটি চৌকি ছিল। লালমনিরহাট ও ফুলবাড়ী থানার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ধরলা নদী। এ নদীর পশ্চিম দিকে কুলাঘাট আর পূর্বদিকে শিমুলবাড়ি ঘাট।
৭১-এ ফুলবাড়ী মুক্তাঞ্চল ছিল। কুলাঘাট থেকে মাত্র ৬-৭ কিলোমিটার দূরে লালমনিরহাট শহরে পাকিস্তানিদের একটি ঘাঁটি ছিল। উপরন্তু এ এলাকায় বিপুলসংখ্যক অবাঙালির বসবাস ছিল। এখান থেকে প্রায়ই পাকসেনারা কুলাঘাটে হানা দিত। তারা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে যেত। নারীদের ওপর নির্যাতন চালাত। তারা বিভিন্ন বাড়িতে লুটপাট করত।
১১ই আগস্ট পাকিস্তানি সৈন্যদের ২৫ জনের একটি দল কুলাঘাটে এসে ধরলা নদী পাড় হতে চেষ্টা করে। পাকসেনাদের আসার খবর পেয়ে ফুলবাড়ীতে থাকা মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার সিরাজ তাঁর দলকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে কুলাঘাটের উজানে উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থান নেন। পাকিস্তানিরা গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়লে সিরাজুল ইসলামের কোম্পানি ও বদরুজ্জামান কোম্পানির সদস্যরা এবং কুলাঘাটের দিক থেকে আকরাম বাহিনীর সদস্যরা ত্রিমুখী আক্রমণ করেন। এ আক্রমণে সঙ্গে-সঙ্গে ১২ জন হানাদার পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। একজন পাকিস্তানি সৈন্য ধরা পড়ে। বাকিরা লালমনিরহাটের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণ ও বিজয় স্থানীয় পাকসেনা ও অবাঙালি স্বাধীনতাবিরোধীদের মনোবলে প্রচণ্ড আঘাত হানে। [আব্দুল খালেক ফারুক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড