কুতুবকাঠী যুদ্ধ (কাউখালী, পিরোজপুর)
কুতুবকাঠী যুদ্ধ (কাউখালী, পিরোজপুর) মে মাসের শেষদিকে সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে হানাদার বাহিনী পরাজয় বরণ করে এবং তাদের ২৮ জন সৈন্য নিহত হয়। দুই সহোদর জাঙ্গুল খান ও বাঙ্গুল খান এবং আব্দুল মালেক খান নামে ৩ জন পাকিস্তানি সৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে।
কাউখালী ও ঝালকাঠীর সীমান্ত এলাকায় কুতুবকাঠীর অবস্থান। স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে হানাদার বাহিনী জানতে পারে যে, এ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করছেন। কাউখালী থানার ওসি পিরোজপুর সদরে পাকিস্তানি সৈন্যদের হেডকোয়ার্টার্সে ক্যাপ্টেন এজাজকে এ খবর নিশ্চিত করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করতে থাকে। নির্দেশনা পেয়ে কাউখালী বিআইডাব্লউটিএ বিল্ডিং-এ হানাদার ক্যাম্প থেকে সুবেদার জানে আলামের নেতৃত্বে এক প্লাটুন এবং ঝালকাঠী থেকে লঞ্চযোগে এক প্লাটুন সৈন্য স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ রাজাকারদের দেখানো পথে কুতুবকাঠীর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা এ খবর জানতে পেরে কমান্ডার আব্দুল হাই পনা তাঁর দল নিয়ে সেওতা গ্রামে এবং কামান্ডার হাবিবুর রহমান তাঁর দল নিয়ে কুতুবকাঠী গ্রামে অবস্থান নেন। হানাদার বাহিনীর দলটি কুতুবকাঠী পৌঁছলে কামান্ডার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেন। চারদিকে পানি-কাদা থাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে হানাদার বাহিনী সুবিধা করতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের ২ গ্রুপের সঙ্গে গ্রামবাসী যোগ দিলে হানাদার বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে। সকাল থেকে শুরু হয়ে এ-যুদ্ধ রাত পর্যন্ত চলে। যুদ্ধে ২৮ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং একজন গ্রামবাসী মো. ইসহাক আহত হন। দুই সহোদর সিপাহি জাঙ্গুল খান ও বাঙ্গুল খান এবং আব্দুল মালেক খান নামে ৩ জন পাকিস্তানি সৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড