কালারপোল পুলিশ ফাঁড়ি অপারেশন (পেটিয়া, চট্টগ্রাম)
কালারপোল পুলিশ ফাঁড়ি অপারেশন (পেটিয়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ২৫শে সেপ্টেম্বর ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে। ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা অসহযোগ আন্দোলন- সমর্থন, এমনকি প্রতিরোধযুদ্ধের সময় এ ফাঁড়িতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ চললেও ১৬ই এপ্রিল পটিয়া পতনের পর থানা ফাঁড়িটি রাজাকার-মুজাহিদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কিছু পুলিশ সদস্যও তাতে যোগ দেয়। তারা কালারপোলসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রতিনিয়ত অত্যাচার, নির্যাতন ও লুটতরাজ চালাত। এ-কারণে ক্যাপ্টেন করিম সেখানে অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।
২৫শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে কিছু মুক্তিযোদ্ধা ফাঁড়িতে আক্রমণ করলে সেখানে অবস্থানরত -রাজাকার-, মুজাহিদ- ও পুলিশ সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি পাল্টা আক্রমণ করে। প্রায় দুঘণ্টা যুদ্ধ চলে। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে ২ জন রাজাকার ও ২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হলে রাজাকার, মুজাহিদ ও পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে যায়। ফাঁড়িতে এ-সময় কোলাগাঁও ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সোনা মিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে গ্রেপ্তার করেন। যুদ্ধশেষে ফাঁড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ১২টি রাইফেল ও ২টি স্টেনগান উদ্ধার করে গ্রেপ্তারকৃত সোনা মিয়া চৌধুরীকে নিয়ে গন্তব্যে প্রস্থান করলেও পরে তাকে মুক্ত করে দেন। এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- ক্যাপ্টেন করিম (নোয়াপাড়া, রাউজান), হাবিলদার নুরুল আলম, গোলামুর রহমান, নাসির উদ্দিন, ওবায়েদ, কালু, আবু তাহের, জহির, আমির আহমদ, বদি, এম এন ইসলাম, কাসেম, জব্বার, ফেরদৌস, টেবলেট মনছুর, আবদুর রশিদ, সালাম প্রমুখ। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড