কদলপুর রমজান আলী হাট অপারেশন
কদলপুর রমজান আলী হাট অপারেশন (রাউজান, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় অক্টোবর মাসের শেষদিকে। চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত রাউজান উপজেলা সদর থেকে আড়াই মাইল দক্ষিণ-পূর্বে মহাদেবপুর নামক স্থানে এ হাটের অবস্থান। পাকিস্তান আমলে মহাদেবপুরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মোহাম্মদপুর। এখানকার আর্যমিত্র এলাকাটি বর্ধিষ্ণু বড়ুয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা পাকবাহিনীর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজেদের ‘চায়না বুদ্ধিস্ট’ বলে পরিচয় দিত। এ কারণে পাকসেনারা এখানে তেমন একটা আসত না। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মধ্যে থেকে নির্ভয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যেতেন। তাই আর্যমিত্র অঞ্চলটি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে রাউজান, কদলপুর ও সুলতানপুর থেকে রাজাকাররা মাঝে-মাঝে কদলপুর হাটে এসে সাধারণ মানুষদের ওপর অত্যাচার করত। তারা দোকানদারদের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করত এবং নিরপরাধ মানুষদের ধরে নিয়ে যেত। তাদের এই অত্যাচার বন্ধ করার উদ্দেশ্যে অক্টোবর মাসের শেষ মঙ্গলবারের হাটের দিন বিকেলে চাঁদাবাজির সময় মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে তাদের ওপর অক্রমণ চালান। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কমান্ডার শফি ও কমান্ডার হাসেম চৌধুরী এ অপারেশনের নেতৃত্ব দেন। এতে দুজন রাজাকার গুলিবিদ্ধ হয় এবং ছয়জন বাজারের মানুষের মধ্যে মিশে যায়। তাদের ফেলে যাওয়া দুটি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধারা হস্তগত করেন। [আহমেদ আমিন চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড