You dont have javascript enabled! Please enable it! কড়িবামুজা যুদ্ধ (কাহালু, বগুড়া) - সংগ্রামের নোটবুক

কড়িবামুজা যুদ্ধ

কড়িবামুজা যুদ্ধ (কাহালু, বগুড়া) সংঘটিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে। এতে ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ১ জন -রাজাকার- নিহত হয়।
কড়িবামুজা বগুড়া জেলার কাহালু থানার দুর্গাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম। গ্রামের মোজাম্মেলের বাড়ির দোতলায় অধ্যক্ষ হোসেন আলীর নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধারা দিনে ঘুমাতেন এবং রাতে অপারেশনে যেতেন। এলাকায় তা জানাজানি হয়ে যায়। রাজাকারদের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী এ খবর জেনে যায় এবং কড়িবামুজায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। ঘটনার দিন ছিল হাটবার। হাট করতে গিয়ে কড়িবামুজার পাশের থলপাড়া গ্রামের রফিক শেখ খবর পান রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কড়িবামুজা গ্রামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। হাট রেখে তিনি দ্রুত পায়ে হেঁটে থানা সদর থেকে ৩-৪ মাইল দূরে কড়িবামুজা গ্রামে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এ খবর পৌঁছে দেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের সহযোগী রাজাকারদের নিয়ে গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। ঐ দলে মোট সদস্য ছিল ২০ থেকে ২৫ জন। পাকিস্তানি বাহিনী আসার সংবাদ শুনে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম জনশূন্য হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা তখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ২ জন মুক্তিযোদ্ধা গ্রামের প্রবেশমুখে অস্ত্র নিয়ে পাহারারত ছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনী আসার খবর পেয়ে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও প্রস্তুত হয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। রাজাকারদের নিয়ে হানাদার বাহিনী গ্রামের কাছাকাছি আসতেই মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছোড়েন। পাকিস্তানি সৈন্যরা পাল্টা গুলি ছুড়ে তার জবাব দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ১ জন রাজাকার নিহত হয়। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে পাকিস্তানিদের প্রবল আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। পাকিস্তানি সৈন্যরা ফিরে যাওয়ার সময় গ্রামের অনেক বাড়িতে আগুন দেয়। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ২য় খণ্ড