উনকিলা বাজার ব্রিজ যুদ্ধ
উনকিলা বাজার ব্রিজ যুদ্ধ (শাহরাস্তি, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ১৫ই নভেম্বর। এতে ১ জন রাজাকার ও ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। বাকি পাকসেনারা পিছু হটে পালিয়ে যায়।
চিতােষী রেলস্টেশন এবং শাহরাস্তি রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে উনকিলা বাজার ব্রিজটি অবস্থিত। পাকবাহিনী রেলস্টেশন থেকে সড়ক পথে শাহরাস্তি থানায় যােগাযােগ, সেনা, অস্ত্রশস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করত এবং বিদ্রোহ দমনের নামে হত্যা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযােগ ও নারীধর্ষণে মেতে উঠেছিল। ১৫ই মে তারা চিতােষী রেলস্টেশন থেকে এসে রায়শ্রী হিন্দুবাড়িতে কয়েকজনকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন- চিত্তরঞ্জন মজুমদার, প্রণব মজুমদার, সুভাষ চন্দ্র মজুমদার প্রমুখ। পিপলকরা গ্রামের ১ জনসহ মােট ৭ জনকে হত্যা করা হয়। পাকসেনারা এদেশীয় রাজাকারদের সহযােগিতায় রেলস্টেশন ও রেলব্রিজ এলাকায় অবস্থান নিয়ে পাহারা দিত। মুক্তিযােদ্ধারা পাকসেনা ও রাজাকারদের ওপর চোরাগুপ্তা হামলা করে ব্যতিব্যস্ত রাখতেন।
১৫ই নভেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রেলপথে এসে নাওড়া মঠের ভেতরে অবস্থান নেয়। তাদের অবস্থান টের পেয়ে মুক্তিযােদ্ধা ও মুক্তিকামী জনসাধারণ হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। অতঃপর পাকসেনারা নাওড়া মঠ থেকে বের হয়ে সরাসরি রেললাইন ধরে গুলিবর্ষণ করতে-করতে উনকিলা বাজার ব্রিজের কাছে এসে দেখে ব্রিজটি উপড়ে ফেলা হয়েছে। এতে তারা প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়। এখানে সরাসরি মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ হয়। মুক্তিসেনাদের উনকিলা বাজার ব্রিজ অপারেশনের মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন করা। উনকিলা গ্রামের ফরিদ উল্যা চৌধুরী, মাে. ফারুক, মাে. মােস্তাক আহমদ, আলী আকবর, হাবিব উল্যাহ, আমিন মাস্টার, আইউব আলী হাবিলদার, বড়তুলার আবুল বাশার, হাটপাড়ের রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম মােহন, হাতেম আলী, ছেফায়েত উল্যাহ, শফিক (বিজয়পুর), জাকির, খুরশিদ, ফয়েজসহ আরাে অনেকে এখানকার অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন। এ অপারেশনে ১ জন রাজাকার ও ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। বাকি পাকসেনারা পিছু হটে পালিয়ে যায়। [মাে. মিজানুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড