উখিয়া থানা অপারেশন
উখিয়া থানা অপারেশন (উখিয়া, কক্সবাজার) ১২ই ডিসেম্বর পরিচালিত হয়। অপারেশনে থানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। ৮৭টি রাইফেল ও ৪,৭৪০ রাউন্ড তাজা গুলি মুক্তিযােদ্ধাদের হস্তগত হয়। এ অপারেশনের পর অধিনায়ক আবদুস ছােবহান উখিয়াকে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘােষণা করেন।
উখিয়া থানার রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সংগ্রাম কমিটির সদস্য সিরাজুল হক চৌধুরী ওরফে গুরা মিয়া ও ছাত্রলীগ নেতা শাহজাহান চৌধুরী চিঠির মাধ্যমে আবদুস ছােবহান বাহিনীর প্রধান আবদুস ছােবহানকে অবহিত করেন যে, হানাদার বাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যরা উখিয়া থানার মালখানা লুট করে অস্ত্র ও গােলাবারুদ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এ খবর জানতে পেরে অধিনায়ক আবদুস ছােবহান তাঁর বাহিনীর মুক্তিযােদ্ধাদের ৫টি গ্রুপে বিভক্ত করে ১২ই ডিসেম্বর উখিয়া থানায় অপারেশন করেন। মুক্তিযােদ্ধারা থানা ঘেরাও করে রাজাকার ও পুলিশকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা কোনােরকম প্রতিরােধ না করে আত্মসমর্পণ করে। বিনা রক্তপাতে রাজাকার ও পুলিশ আত্মসমর্পণ করার পর ৮৭টি থ্রি নট থ্রি (৩০৩) রাইফেলস ও ৪,৭৪০ রাউন্ড বুলেট মুক্তিযােদ্ধাদের হস্তগত হয়। এরপর অধিনায়ক আবদুস ছােবহান উখিয়া এলাকাকে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘােষণা করেন।
হাবিলদার আবদুস ছােবহানের নেতৃত্বাধীন গেরিলা দল ও অন্যান্য মুক্তিযােদ্ধারা উখিয়া থানা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে দুদু মিয়া, কালা মিয়া, সুনীল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন, মধুসূদন দে, সুলতান আহমদ, ইপিআর হাবিলদার আবদুল জলিল, নায়েক ফয়েজ আহমদ, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নায়েক আবদুস সালাম, ইপিআর সিপাহি নুরুল ইসলাম গাজী, সিপাহি আবদুল খালেক, সিপাহি এম এ ওহাব রাজা, সিপাহি মােহাম্মদ হােছাইন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিপাহি রেজাউল করিম, মঞ্জুর আলম চৌধুরী, হ্নীলার মােহাম্মদ আইয়ুব ওরফে আইয়ুব বাঙালি, নুরুল আমিন সিকদার, সিরাজুল হক সিকদার (প্রয়াত), দীপক বড়য়া, কবির আহমদ, ভালুকিয়ার পরিমল বড়ুয়া, হােয়াইক্ষ্যং-এর জাফর আলম, রামু উখিয়াঘােণার মােজাফফর আহমদ উল্লেখযােগ্য। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড