ঈশ্বরদী গণহত্যা
ঈশ্বরদী গণহত্যা (খােকসা, কুষ্টিয়া) সংঘটিত হয় মে মাসে। এতে অনেক গ্রামবাসী শহীদ হন।
এপ্রিলের শেষদিকে খােকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মুসলীম লীগ নেতা মাওলানা আকামদ্দিনের নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। তার সঙ্গে যােগ দেয় কাঠু সিরাজ নামে এক জামায়াত নেতা (মােড়াগাছা)। কাঠু সিরাজ ছিল অত্যন্ত কট্টরপন্থী। সে শুধু জ্বালাও-পােড়াও করত। তার নেতৃত্বে গঠিত রাজাকারবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের খবর সংগ্রহ করত এবং গ্রামের নিরীহ মানুষদের ধরে আনত। খােকসা উপজেলায় হিন্দু জনগােষ্ঠীর সংখ্যা বেশি ছিল। রাজাকাররা তাদের মালামাল লুণ্ঠন করত।
জানিপুর, কমলাপুর ও ঈশ্বরদী অঞ্চলে তখনাে বেশকিছু হিন্দু আত্মগােপন করে আছে এ সংবাদ মুসলিম লীগ নেতা সাদ আহম্মদের মাধ্যমে কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত পাকবাহিনীর কাছে। পৌছলে হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযােগ ও গণহত্যার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মে মাসের কোনাে এক সময় হানাদাররা ঈশ্বরদী গ্রামে হানা দেয় এবং গণহত্যা চালায়। এতে অনেক গ্রামবাসী শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৫ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- রমজান শাহ (ঈশ্বরদী), মিন্টু বাড়ই (দশ কাহনীয়া), বালেশ্বর মাঝি, ধীরেন্দ্রনাথ চন্দ দুলা (হিলালপুর) ও আকুল চন্দ্র দাস (কমলাপুর ঋষিপাড়া)। এদিন হানাদাররা খাগড়বাড়ী, ঈশ্বরদী, একতারপুর ও ওসমানপুরে হিন্দুদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দেয়। [মাে. শামীম রেজা]।
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড