ঈশ্বরপুর যুদ্ধ
ঈশ্বরপুর যুদ্ধ (কালীগঞ্জ, গাজীপুর) সংঘটিত হয় ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ-যুদ্ধে ৩ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযােদ্ধা মাে. মােজাফফর শহীদ হন।
ন্যাশনাল জুট মিল গণহত্যার (১লা ডিসেম্বর) কয়েকদিন পর পাকিস্তানি বাহিনী পুনরায় এ এলাকা আক্রমণ করলে মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। হানাদার বাহিনীর একটি দল পথ ভুলে ঈশ্বরপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ঈশ্বরপুর গ্রামের মাে. মােজাফফরসহ আরাে কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা হানাদার বাহিনীকে লক্ষ করে গুলি করলে একজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত যায়। অতঃপর পাকিস্তানি সৈন্যদের পাল্টা আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধা মাে. মােজাফফর শহীদ হন। পথহারা পালয়নপর পাকিস্তানি সৈন্যরা ভূঞায়ব নামক স্থানে পৌছলে মুক্তিযােদ্ধারা স্থানীয় জনগণের সহযােগিতায় ২ জনকে ঘিরে ফেলে এবং পানিতে ডুবিয়ে লাঠিপেটা করে হত্যা করে। এ সময় হানাদাররা জামালপুরের জেলে সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরসহ এম এ আজিজ, মােশারফ বিএসসি, খলাপাড়ার হাজী আ. জব্বার, ডা. শুকুর আলী, ব্রজেন্দ্র ভক্ত, ক্ষিতীশ নন্দী, লাল মিয়া মেম্বার, আনােয়ারা বেগম প্রমুখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে লাগিয়ে দেয়। তারা ধানক্ষেতে পলায়নরত চক জামালপুরের সমা ঘােষকে গুলি করে হত্যা করে। জামালপুরের ফিরােজ মিয়া নিজ বাড়ির আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
ঈশ্বরপুর যুদ্ধে এম এ আজিজ ও ফরহাদের নেতৃত্বে এনামুল, জামালউদ্দিন, রফিক, হিরণ, লাল মিয়া, খােরশেদ, মাজহারুল ইসলাম, সিরাজ উদ্দিন, মহিউর রহমান, বদরুজ্জামান, হেলাল উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন মােল্লা, বুরুজ আলী, মজিদ আলী, গিয়াস উদ্দিন, মাে. মােজাফফর হােসেন, সাফিজুদ্দিন ভাঙ্গি, ইদ্রিস আলী, জয়নাল কামান্ডার, লালমিয়া, রহিম নেওয়াজ সরদার, আ. হামিদ কমান্ডার, মান্নান ফকির, কাজী কবির, হাসন সরদার, আহসান আলী, বিল্লাল, শামসুল হক, নাজিমদ্দিন গাজী সিদ্দিক, আজিমউদ্দিন, নাছির, সুলতান, কাদির, ফজলু, রমি, লতিফ, মােমেন মিয়া, জায়েদ মিয়া, মােহাম্মদ আলী, আনােয়ার প্রমুখ মুক্তিযােদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। [মু. নাজমুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড