আমিরহাট রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন
আমিরহাট রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (রাউজান, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় তিন দফায়। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের আমিরহাটে অবস্থিত রাজাকারদের এ ক্যাম্পে ফিরােজ বাহিনীর মুক্তিযােদ্ধারা মমতাজুল হক শিকদারকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম অপারেশন পরিচালনা করেন নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। এতে দুজন রাজাকার মারাত্মকভাকে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যায়। এরপর ১৮ই নভেম্বর এফএফ বাহিনীর কামাল উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত দ্বিতীয়বারের অপারেশনে আবুল কালাম নামে একজন রাজাকার নিহত হয়। ১০ই ডিসেম্বর কামাল উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাহিদ হােসেন (ফতেনগর), ইফতেখার হােসেন (কক্সবাজার), আনন্দ বড়ুয়া (রাউজান), মনসুর মুন্না, সানােয়ার আলী প্রমুখ ২০ জন মুক্তিযােদ্ধা তৃতীয়বার অপারেশন পরিচালনা করেন। এসময় পঙ্কজ বড়ুয়া (পিতা সুরেন্দ্র লাল বড়ুয়া), সামসুল আলম (পিতা বদিউল আলম, নােয়াখালী) ও আব্দুল মান্নান (পিতা এস এম আব্দুল জলিল) নামে তিনজন মুক্তিযােদ্ধা শহীদ হন। এ-সময় ক্যাম্পে কয়েকজন পাকসেনা ছিল। দুপুরের পরে তারা রাউজান থেকে আরাে সেনা এনে পার্শ্ববর্তী হলদিয়া গ্রাম আক্রমণ করে এবং গণহত্যা চালায়।
হলদিয়া গণহত্যা ও রাজাকারদের ক্যাম্প অপারেশনে তিনজন মুক্তিযােদ্ধার শহীদ হওয়ার খবর শুনে নানুপুর থেকে লেফটেন্যান্ট শওকতের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধাদের একটি দল এবং ফটিকছড়ি থেকে মুক্তিযােদ্ধারা এসে ক্যাম্পে নতুন করে অবস্থানরত পাকবাহিনীকে তিন দিক থেকে ঘেরাও করেন। ফলে সৰ্ত্তাখালের পাড়ে আমির হাটের কাছে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে ৩ জন পাকসেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। তখন সন্ধ্যা সমাগত প্রায়। তাই পাকসেনারা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিহতদের লাশ ও আহতদের নিয়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পথের পাশের কয়েকটি হিন্দুবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। [আহমেদ আমিন চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড