You dont have javascript enabled! Please enable it! আমড়াজুড়ী বধ্যভূমি (কাউখালী, পিরােজপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

আমড়াজুড়ী বধ্যভূমি

আমড়াজুড়ী বধ্যভূমি (কাউখালী, পিরােজপুর) কাউখালী উপজেলার বৃহৎ বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার বাহিনী এ বধ্যভূমিতে শতাধিক মুক্তিযােদ্ধা, আওয়ামী লীগ কর্মী এবং নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। আমড়াজুড়ী বধ্যভূমিটি কাউখালী লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। কাউখালী উপজেলায় হানাদার বাহিনী অনুপ্রবেশ করে বিআইডাব্লউটিএ বিল্ডিং-এ ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্প ছিল তাদের নির্যাতনকেন্দ্র। সুবেদার জানে আলমের কমান্ডে এক প্লাটুন পাকিস্তানি সৈন্য এবং পুলিশসহ ১৩০ জনের মতাে সদস্য এখানে অবস্থান করত। সুবেদার জানে আলম ছিল পাঞ্জাবি এবং দয়ামায়াহীন এক পাষণ্ড অফিসার। লুণ্ঠন ও ধর্ষণে তার ছিল উৎসাহ। ক্যাম্পের সন্নিকটে আমড়াজুড়ী ছিল তাদের বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধকালে এ বধ্যভূমিতে তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে নির্মমভাবে নির্যাতন শেষে হত্যা করত। হানাদার বাহিনী এ বধ্যভূমিতে শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেনকেউন্দিয়া গ্রামের মােক্তাদিদুল ইসলাম বেল্লাল (পিতা নূর ইসলাম মাঝি), মাে. সাফায়েত হােসেন (পিতা আশ্রাব আলী), কাউখালী বন্দরের দুলাল চন্দ্র মুখার্জী (পিতা নারায়ণ চন্দ্র মুখার্জী), পরিমল চন্দ্র (পিতা নকুল চন্দ্র), চৈতন্য নাথ মণ্ডল (পিতা রাম দয়াল মণ্ডল), দ্বীনবন্ধু হালদার (পিতা দুলাল চন্দ্র হালদার), দুলাল চন্দ্র কুণ্ডু (পিতা দীনবন্ধু কুণ্ডু), আসপদ্দী গ্রামের গােলক চন্দ্র সমদ্দার (পিতা প্রসন্ন সমদ্দার), ডাক্তার হরকান্ত সমদ্দার, ক্ষেত্র মােহন মণ্ডল। (পিতা রাম দয়াল মণ্ডল), গােপাল চন্দ্র মণ্ডল (পিতা নিত্যানন্দ মণ্ডল), যদুনাথ সরকার (পিতা গঙ্গারাম সরকার), নির্মল চন্দ্র সরকার (পিতা ক্ষীরদ চন্দ্র সরকার), চিরাপাড়া গ্রামের রাম বিষ্ণু খাসকেল (পিতা ভদ্র খাসকেল), বলাই সিকদার (পিতা অম্বিকা সিকদার), মাখম বিশ্বাস (পিতা ললিত বিশ্বাস), অতুল মুখার্জী (পিতা অখিল মুখার্জী), বিত্তবাসী (পিতা গুরুদাস), বিনাথ সমাদ্দার (পিতা বাণীকান্ত সমাদ্দার), আইরন গ্রামের আব্দুল আউয়াল (পিতা আত্তাব আলী), জয়কুল গ্রামের ফজলু সিকদার, গন্ধর্বপুর গ্রামের অমূল্য চন্দ্র সমাদ্দার (পিতা গােপাল চন্দ্র সমাদ্দার) ও চৈতন্য মণ্ডল (পিতা দয়াল মণ্ডল)। দূর-দূরান্তের হওয়ায় সকলের পরিচয় জানা যায়নি। হত্যার পর শহীদদের অনেককে পাশ্ববর্তী গণকবরে মাটিচাপা দেয়া হয়। [মনিরুজ্জামান শাহীন]।

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড