বীর প্রতীক আব্দুল হামিদ খান
আব্দুল হামিদ খান, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৫) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩৫ সালে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার দক্ষিণ কবাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আরফিন খান এবং মাতার নাম আজিতুন্নেসা। তিনি গাজিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৫১ সালে পুলিশ বাহিনীতে যােগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৫৭ সালে তিনি ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)-এ যােগ দেন এবং ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত ইপিআর সদর দপ্তরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
আব্দুল হামিদ ১৯৭১ সালে হাবিলদার হিসেবে রংপুরে কর্মরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবং বুড়িমারীতে অবস্থিত ৬নং সেক্টরের সদর দপ্তরের উইং কমান্ডার মােহাম্মদ খাদেমুল বাশার, বীর উত্তমএর নেতৃত্বে এ সেক্টরের সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি এ সেক্টরের অধীনস্থ তিস্তাঘাট, লালমনিরহাট, টোগরাইহা, ভুরুঙ্গামারী, পাটেশ্বরী, মােগলহাট, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ইত্যাদি স্থানে পকসেনাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরত্বের পরিচয় দেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার আব্দুল হামিদ খানকে ‘বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নং ৪৪৯, খেতাবের সনদ নং ১৯৯)।
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে আব্দুল হামিদ বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যােগদান করেন এবং ১৯৭৩ সালে হাবিলদার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি খুলনার একটি জুট মিলসে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করেন। তারপর নিজের গ্রামে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মােসা. মনােয়ারা বেগম। বর্তমানে তিনি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার কালেরকাঠি গ্রামে বসবাস করছেন। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড