অনারারি লেফটেন্যান্ট ও যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা বীর বিক্রম আব্দুল হক
আব্দুল হক, বীর বিক্রম (জন্ম ১৯৩৮) অনারারি লেফটেন্যান্ট ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযােদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯৩৮ সালে বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার সাকোকাঠি গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মাে. কফিল উদ্দিন মােল্লা এবং মাতার নাম জামিলা খাতুন। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
আব্দুল হক মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে ২১১ ব্রিজ কোম্পানিতে নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবং পরবর্তীতে ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরের নেতৃত্বে ৯ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার বসন্তপুর বিওপি, পামুড়া বিওপি, উসকা বিওপি, বাঁশবাড়ী বিওপি, কৈখালি, ভেটখালি, বরিশাল জেলার সাগরকান্দা, ঝালকাঠি, বাকেরগঞ্জ, রাজাপুর, চাচৈর, পাশা, নলছিটিসহ বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার পরিচয় দেন। ২০শে জুলাই খুলনার ভেটখালিতে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে তিনি আহত হন। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযােদ্ধারা পাকিস্তানিদের শক্তিশালী রাজাপুর ঘাঁটি আক্রমণ করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার শাহজাহান ওমর আহত হলে তাঁকে নিরাপদ স্থানে রেখে আব্দুল হক যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে এসে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। তাঁর কৌশলী ও সাহসী নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা রাজাপুর থানা দখল করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়।
আব্দুল হক ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মাহমুদা হক। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড