হাবিলদার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা বীর বিক্রম আব্দুল হাকিম
আব্দুল হাকিম, বীর বিক্রম (১৯৩২-২০০১) হাবিলদার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৩২ সালের ১০ই মার্চ নােয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলাস্থ পাচগাঁও গ্রামের লালমিয়া ড্রাইভারের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দীন মােহাম্মদ এবং মাতার নাম সাবেদা খাতুন।
আব্দুল হাকিম ইপিআর বাহিনীর সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে তিনি চট্টগ্রাম সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সে হাবিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশমাতৃকার টানে যুদ্ধে যােগ দেন। ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে মেজর) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার পর ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান নেন।
আব্দুল হাকিম কিছুদিন ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। পরে তাকে নিয়মিত বাহিনীর ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত করে ‘জেড ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ‘জেড’ ফোর্সের সদস্য হিসেবে ছাতকের গােয়াইনঘাটসহ বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি বীরত্বের পরিচয় দেন। ৫ই নভেম্বর ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযােদ্ধারা সিলেটের রাধানগরে পাকবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি আক্রমণের জন্য পজিশন নিলে পাকবাহিনী ব্যাপকভাবে আর্টিলারি ফায়ার শুরু করে। মুক্তিযােদ্ধারাও প্রচণ্ডভাবে পাল্টা আক্রমণ চালান। যুদ্ধরত অবস্থায় এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল হাকিম মারাত্মকভাবে আহত হন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আব্দুল হাকিমকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ২ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী রুশিয়া খাতুন। ২০০১ সালের ২৫শে জুন। তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড