You dont have javascript enabled! Please enable it! সিপাহি ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুল মালেক - সংগ্রামের নোটবুক

সিপাহি ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুল মালেক

আব্দুল মালেক, বীর প্রতীক (১৯৪৭-১৯৭১) সিপাহি ও শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধা। তার জন্ম ১৯৪৭ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত বরুড়া থানার হাটপুকুরিয়া গ্রামের বারুল চৌধুরী বাড়িতে। তাঁর পিতার নাম মাে. ফজর আলী এবং মাতার নাম মােসাম্মৎ কদরের নেছা। ৪ ভাই ও ১ বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তিনি বরুড়া থানার পয়েলগাছা হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
আব্দুল মালেক ইপিআর বাহিনীতে চাকরি করতেন। ১৯৫৮ সালে তিনি এ বাহিনীতে সিপাহি পদে যােগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি খুলনা ৫নং ইপিআর উইংয়ে কর্মরত ছিলেন। সাতক্ষীরার ভােমরার কাস্টমস অফিসে মুক্তিযােদ্ধা ক্যাম্পে একাত্তরের ২৯শে এপ্রিল থেকে মুক্তিযােদ্ধাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু হলে তিনি সেখানে অন্য ইপিআর সদস্যদের সঙ্গে মুক্তিযােদ্ধাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেন। এদিনই পাকিস্তানি সেনারা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযােদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ চালান। সিপাহি আব্দুল মালেক তাঁর উইংয়ের সৈন্যদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশ নেন। সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে সহযােদ্ধাদের সঙ্গে তিনি সাতক্ষীরার ভােমরা সীমান্ত দিয়ে ভারতের বশিরহাট মুক্তিযােদ্ধা ক্যাম্পে পৌছান। তিনি ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর আবু ওসমান ও পরবর্তীতে মেজর এম এ মঞ্জুর এবং ভােমরা সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ টি এম সালাহউদ্দিন ও মাহাবুবউদ্দিন আহমেদের অধীনে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। ২৯শে মে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভােমরা মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যুহে আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে সিপাহি আব্দুল মালেক বীরত্বের সঙ্গে শত্রুর মােকাবিলা করতে থাকেন। ১৬-১৭ ঘণ্টা একটানা যুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে বাংকারে অবস্থানরত সিপাহি আব্দুল মালেক বাংকার থেকে মাথা উঁচু করে এলএমজি চালান। এ অবস্থায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এলএমজি-র ছােড়া গুলিতে তিনি শহীদ হন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদান এবং আত্মােৎসর্গের জন্য সিপাহি আব্দুল মালেককে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [রীতা ভৌমিক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড